বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি ও পিবিআই প্রধানের পাসপোর্ট বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:২২ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি ও পিবিআই প্রধানের পাসপোর্ট বাতিল

বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং সৌদি আরবে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী, সঙ্গে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঘোষণা করা হয়।


জাবেদ পাটোয়ারী বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তবে তার নেতৃত্বে ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুলিশ একতরফা ভোটার সহায়ক ভূমিকা পালন করার অভিযোগ ওঠে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং এটি নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরে, সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ২০২০ সালে সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তবে তার পদোন্নতি ও অন্যান্য বিষয়ে বিতর্ক এবং নানা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সরকার তার পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।


২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল জাবেদ পাটোয়ারীকে প্রথম দফায় তিন বছরের চুক্তিতে সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে আবারও একই পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৮ আগস্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর ১৪ আগস্ট তার রাষ্ট্রদূত পদ বাতিল করা হয়। অন্য সকল রাষ্ট্রদূতরা দ্রুত দেশে ফিরে এলেও, জাবেদ পাটোয়ারী সেদিন থেকে দেশে ফিরেননি।


জানা যায়, তার দেশ ফিরতে নির্দেশ দেয়া হলেও, জাবেদ পাটোয়ারী দেশে ফিরে আসেননি এবং ২৮ আগস্ট রিয়াদ ত্যাগ করে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমান। এর পরেই সরকার তার পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও উঠতে থাকে।


এই বিষয় নিয়ে ঢাকা এবং রিয়াদে কূটনৈতিক সূত্রে নানা তথ্য পাওয়া যায়, যা সরকারের সিদ্ধান্তের পেছনে সঠিক কারণ স্পষ্ট করে। সরকার জানায়, এই পদক্ষেপ দেশের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে নেয়া হয়েছে এবং সরকারি সিদ্ধান্তের সাথে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ। 


এছাড়া, পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারেরও পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, যদিও তার বিরুদ্ধে আগের মতো তেমন অভিযোগ নেই। তবে, সরকার তার কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়। এই পাসপোর্ট বাতিলের ঘটনা রাষ্ট্রযন্ত্রের নীতি ও সিদ্ধান্তের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রতিফলিত করে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।


এই পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত সবার কাছে বিস্ময়কর হলেও, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে এটি আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং দেশের স্বার্থের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।