জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট হার পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি হবে বলে জানা গেছে। এর আগে ১৫ জানুয়ারি, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি তাদের চিঠি প্রেরণ করলে এনবিআর তা গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে নতুন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
নতুন ভ্যাট পদ্ধতির আওতায় গত ৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবায় বিভিন্ন হারে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছিল। রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট বাড়িয়ে ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল, যা ব্যাপক আলোচনা এবং সমালোচনার জন্ম দেয়। এই পরিস্থিতিতে রেস্তোরাঁ খাতের প্রতিনিধিরা ভ্যাটের পরিমাণ কমানোর জন্য এনবিআরের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন।
এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট হার পুনর্বিবেচনা করেছে এবং এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত সিদ্ধান্ত শিগগিরই জারি করা হবে। এর ফলে রেস্তোরাঁ মালিকরা আশা করছেন যে তাদের ব্যবসায়ের উপর যে চাপ পড়েছিল, তা কিছুটা কমবে। এনবিআর আরও জানিয়েছে, তারা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সহযোগিতা কামনা করছে, যাতে রাজস্ব বৃদ্ধি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হয়।
রেস্তোরাঁ মালিকদের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং অস্বস্তির কথা উঠে এসেছে। তাদের দাবি, নতুন ভ্যাটের প্রভাব সরাসরি ব্যবসায়ি মুনাফায় পড়ছে এবং সাধারণ গ্রাহকদের জন্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছেন, ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ খাবারের জন্য বেশি টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে, যা অনেকের জন্য আর্থিক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, এনবিআর ভ্যাটের আওতায় কিছু বিষয়ে সমন্বয় করতে চায়, যাতে ব্যবসায়ীদের জন্য কিছুটা সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়। এর মাধ্যমে তাদের দাবি পূরণ না হলেও কিছুটা ন্যায়সঙ্গত সমাধান আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনবিআর এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রেস্তোরাঁ মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পর্যাপ্ত আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছাতে চায়।
এনবিআরের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রেস্তোরাঁ খাতের বিকাশের সাথে সাথে ভ্যাট আহরণের পরিমাণও বজায় রাখতে চাচ্ছে তারা। একই সময়ে, ব্যবসায়ীরা যাতে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারেন, সে বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। এনবিআর আশা করছে, এই পুনর্বিবেচনা তাদের উদ্যোগকে আরো কার্যকর করবে এবং ভ্যাট নীতি থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হবে।
এনবিআরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রেস্তোরাঁ মালিকদের জন্য এখন আর্থিক চাপ কিছুটা কমবে এবং ভ্যাটের আওতায় ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য কিছুটা সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে। তবে, এখনও পুরোপুরি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত রেস্তোরাঁ মালিকদের মধ্যে আশাবাদ এবং উদ্বেগ মিশ্রিত অনুভূতি বিরাজ করছে।
এর আগে, ৯ জানুয়ারি নতুন ভ্যাট নীতি চালু হলে রেস্তোরাঁ মালিকদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তকে ব্যবসা পরিচালনায় কঠিন বলে উল্লেখ করেছিল, যার ফলে এনবিআরকে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে হয়। এই পুনর্বিবেচনার পর, এনবিআর এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের মধ্যে একটি সুষ্ঠু সমঝোতা আশা করা যাচ্ছে।
এনবিআরের এই সিদ্ধান্ত, রেস্তোরাঁ খাতের ব্যবসায়িক পরিবেশে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এই পদক্ষেপ তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্বস্তি নিয়ে আসবে এবং নতুন ভ্যাট নীতির প্রভাবে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে কোনো অপ্রত্যাশিত অসুবিধা তৈরি হবে না।
এনবিআরের এই সিদ্ধান্তের ফলে, রেস্তোরাঁ খাতের ভবিষ্যত প্রভাবিত হবে, এবং সেখানকার ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে আরো আত্মবিশ্বাসী হতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।