বিয়েযোগ্য পাত্রের হাট, শিক্ষা যত, দাম ততো !

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১১ই আগস্ট ২০২২ ১১:১০ পূর্বাহ্ন
বিয়েযোগ্য পাত্রের হাট, শিক্ষা যত, দাম ততো !

সাধারণত বাজারে বিক্রি হয় চাল, ডাল, শাক-সবজিসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। তবে এমনও এক বাজার রয়েছে যেখানে পাওয়া যায় বিবাহযোগ্য পাত্র। ভারতের বিহারে মধুবনী জেলায় রয়েছে এমনই এক বাজার। সেখানে মেয়ের বাড়ির লোকেরা মনের মতো পাত্র কেনে দরদাম করে।


তবে এ বাজার আজকের নতুন নয়, চলছে প্রায় ৭০০ বছর ধরে। বিভিন্ন জেলা থেকে মৈথিলী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরুষরা এসে এ বাজারে সম্ভাব্য পাত্র হিসাবে লাইন দিয়ে দাঁড়ান। এ সময় কারও পরনে থাকে সাবেকি পোশাক, আবার কারও পররে থাকে শার্ট-প্যান্ট। এসময় বিবাহযোগ্য পাত্রের দরদাম নির্ভর করে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পারিবারিক পরিচয়ের উপরে।


স্থানীয়রা এই বিশেষ বাজারকে ‘বরের বাজার’ বা ‘সৌরথ সভা’ বলে থাকেন। প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে জেলার এক বাগানে বসে এই ৯ দিনের বরের বাজার। এসময় যদি কোনও মহিলা এ বাজারে এসে কোনও পুরুষকে পছন্দ করেন এবং বিয়েতে সম্মতি দেন, তখন তার পরিবারের লোকেরা ওই পুরুষের পরিবারের সঙ্গে সম্ভাব্য সম্বন্ধ স্থাপন নিয়ে কথাবার্তা চালাতে শুরু করেন।


৭০০ বছরের পুরনো এই ঐতিহ্যবাহী হাটে বিয়ে করতে আগ্রহী ছেলেরা আসেন। তাদের প্রত্যেকেই নিজের জন্য পণের ট্যাগ লাগিয়ে রাখেন। হাটে আসা বিবাহযোগ্য মেয়ের পুরুষ অভিভাবকেরা, সাধারণত বাবা বা ভাই উপযুক্ত পাত্রকে বেছে নেন। সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় কনের পছন্দ বা অপছন্দ কিছুই বলার থাকে না।


ইতিহাস ঘেটে জানা যায় এই অদ্ভুত ঐতিহ্যের জন্মদাতা ছিলেন কর্নাট রাজবংশের রাজা হরি সিংহ। এই বাজার তৈরির পেছনে তার উদ্দেশ্য ছিলো বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে বিবাহ চালু করা এবং বিবাহ প্রথাকে যৌতুকমুক্ত করা। সেসময় লাল রঙের ধুতি পরে বাজারের বট গাছের নীচে বরেরা দাঁড়িয়ে থাকবেন, এটিই ছিলো প্রথা। সূত্র: আনন্দ বাজার