প্রকাশ: ২ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:২৮
বাংলায় একটি কথা আছে , কারো পৌষ মাস , কারো সর্বনাশ । ঠিক মহামারি যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবেরদের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। এ সময় দেশটির শীর্ষ বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ মার্কিন ডলার। এই অর্থের পাঁচ ভাগের এক ভাগই কামিয়েছেন যথাক্রমে আমাজন ও টেসলার কর্ণধার জেফ বেজোস ও ইলন মাস্ক।
তবে এই বৈভবের অপর পিঠেই আছে বৈষম্যের ভয়াবহ এক চিত্র। বর্তমানে চরম দারিদ্র্য সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন কোটি কোটি মার্কিন নাগরিক। বিভিন্ন খবরে এসেছে, করোনা মহামারির কারণে অর্থাভাবে কোটিরও বেশি মার্কিনি যথেষ্ট পরিমাণ খেতে পাচ্ছেন না এবং কাজ হারিয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
গত বছর টেসলা ও স্পেস এক্সের মালিক ইলন মাস্কের মোট সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে পাঁচ গুন, যার পরিমাণ ১৩ হাজার ২শ’ কোটি ডলার। এর ফলে তার মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১৫ হাজার ৯শ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা তাকে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতে পরিণত
করেছে। অন্য দিকে আমাজনের জেফ বেজোসের সম্পদ গত বছর বেড়েছে ৭ হাজার কোটি ডলার। তার মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১৮ হাজার ৬শ বিলিয়ন ডলার।
মাস্ক ও বেজোসের সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে শেয়ার বাজারে টেসলা ও আমাজনের দাম বৃদ্ধির। ফলে। গত বছর টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮শ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। ২০২০ এ চীনের সাংহাইতে টেসলার কারখানায় গাড়ি উৎপাদন শুরু হয়েছে, মুনাফা অর্জনে কোম্পানিটি স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পেরেছে এবং তাদের বিদ্যুতচালিত গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে আমাজনের ক্ষেত্রে বড় সংখ্যক আয় হয়েছে তাদের অর্ডার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। লকডাউনের কারণে দোকানগুলো বন্ধ থাকায় আমেরিকার অধিকাংশ জনগণ আমাজনের মাধ্যমে অনলাইনে কেনাকাটা করেছে। এছাড়া আমাজনের আইটি সলিউশন কোম্পানি আমাজন ওয়েব সার্ভিসও গত বছর প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছে।
মহামারির বছরে এই দুই ধনকুবেরের যৌথভাবে সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ২শ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের ১৩৯টি দেশের জিডিপির চেয়ে বেশি। এক শতাব্দী আগে রকফেলার ও কার্নেগির পর থেকে আমেরিকায় কোনো একক ব্যক্তির সম্পদ এতটা বৃদ্ধি পাওয়ার
নজির আর দেখা যায়নি। এই ২শ বিলিয়ন ডলার দিয়ে এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সকল নাগরিককে তাদের প্রয়োজনের আট গুন বেশি খাবার দেয়া যাবে। এই অর্থের পরিমাণ করোনাভাইরাস ত্রাণের জন্য মার্কিন সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়েও বেশি।