বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত ইউটিউব চালালেও দিতে হবে ট্যাক্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২রা ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:২১ অপরাহ্ন
বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত ইউটিউব চালালেও দিতে হবে ট্যাক্স

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কেউ ইউটিউব চ্যানেল চালালেও তাকে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ট্যাক্সেশনের আওতায় আসতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। কেউ কেউ সামাজিক সচেতনতার বিষয়গুলো ইউটিউবে তুলে ধরছেন। আবার ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে ভিউয়ারের সংখ্যার অনুপাতে  অনেকেই অর্থ উপার্জন করছেন, এক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের সংখ্যাই বেশি।

অনেকে ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল খুলে বসেছে- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল করতে পারে। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ছাড়া যে কেউ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যেমন করতে পারে তেমনি কেউ ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলও করতে পারে। বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছে এবং সেগুলো প্রচুর সংখ্যক শেয়ার করছে- এগুলোর বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করে…, আমরা কিন্তু ইউটিউব, ফেসবুকসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের মাধ্যম ব্যবহার করে যে ব্যবসা হচ্ছে বা বিজ্ঞাপন যাচ্ছে সেগুলোতে ট্যাক্স আরোপ করার কথা বলেছি। আমরা এনবিআরের সঙ্গেও কথা বলেছি। ‘সুতরাং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কেউ যদি করে সেক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের নিয়ম-ট্যাক্সেশন আইন অনুযায়ী আইন মেনে করতে হবে।’

ভিডিও চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হয়নি মোবাইল অপারেটরদের
তথ্যমন্ত্রী জানান, মোবাইল কোম্পানিগুলো নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ছে আবার সেখানে বিজ্ঞাপনও নিচ্ছে। এটির লাইসেন্স তাদের দেওয়া হয়নি। তাদের মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তারা যেভাবে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে এবং বিজ্ঞাপন দিচ্ছে অর্থাৎ সেখানে ব্যবসা করছে- এটির লাইসেন্স তাদের দেওয়া হয়নি।

‘এটি বন্ধ করতে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা ইতোমধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে চিঠি দিয়েছি। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকেও আলোচনা করেছি। এটিও একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। এভাবে যে কেউ চাইলেই যে কোনো কিছু লাইসেন্সবিহীন করতে পারে না।’ তবে যেগুলো বিজ্ঞাপন চলছে সেগুলোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিটিআরসি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে কোনো কিছু অননুমোদিত হওয়া উচিত নয়।

ডাবিং সিরিয়াল প্রচারে অনুমতি দিতে কমিটি
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন টেলিভিশনে যে বিদেশি সিরিয়াল ডাবিং করে প্রচার করা হচ্ছে সেগুলো অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছি ও অনুমতির জন্য দরখাস্ত করেছে। আমরা অনেকগুলো দরখাস্ত নিষ্পত্তি করেছি। একটি ছবি মুক্তি পেতে হলে তাকে সেন্সরবোর্ড হয়েই আসতে হয়। এই সিরিয়ালগুলো একটি ছবির চেয়েও সময় অনেক বেশি। কোনোটা ৫০ পর্ব, কোনোটা ৩০ পর্ব– এরকম বহু পর্বে ও প্রতিটা পর্ব হচ্ছে এক ঘণ্টা কিংবা আধা ঘণ্টা কিংবা ৪৫ মিনিটের পর্ব।

‘এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়। সে লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যেই একটি বাছাই কমিটি গঠন করেছি। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (সম্প্রচার) নেতৃত্বে কমিটিতে বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, সারা যাকের, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স প্রতিনিধি, ডিরেক্টরস গিল্ডের একজন প্রতিনিধি, অভিনয় শিল্পী সংঘের একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। একজন উপসচিব সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে যেকোনো টেলিভিশনে কোনো বিদেশি ডাবিং করা সিরিয়াল প্রচার করতে হলে এই কমিটি দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, নতুন প্রজন্মের মনন তৈরিতে বা সমাজে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলছে কিনা- তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদন দেবে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে যতদ্রুত সম্ভব পুরো শৃঙ্খলা আনতে কাজ করব, জানান তথ্যমন্ত্রী।