রেমিট্যান্স বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: রবিবার ৯ই মার্চ ২০২৫ ০৭:১৩ অপরাহ্ন
রেমিট্যান্স বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি

প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মার্চের ৬ তারিখ পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার হলেও আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।  


গত মাসে দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার, যা আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী ছিল ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহকে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার বেশি।  


চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত দেশে মোট এক হাজার ৭২৭ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ সময়ের মধ্যে জুলাই মাসে এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার এবং জানুয়ারিতে এসেছে ২১৯ কোটি ডলার।  


বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়াতে হুন্ডির মতো অবৈধ পথে টাকা পাঠানো বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে।  


অর্থনীতিবিদদের মতে, রিজার্ভ বৃদ্ধির জন্য রেমিট্যান্স ছাড়াও রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতে বৈদেশিক ক্রেতাদের আগ্রহ ধরে রাখতে হলে প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থাপনা জরুরি।  


বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের আরেকটি হিসাব আইএমএফের জন্য সংরক্ষিত থাকে। এখানে এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা অর্থ এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ গণনা করা হয়।  


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান রিজার্ভ পরিস্থিতি কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা আরও বাড়াতে হলে রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি উভয় খাতেই স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা সামনের দিনে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।