চিকিৎসক সংকট আর অচল মেশিনে ধুকে ধুকে চলছে শেবাচিম

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: সোমবার ২৩শে মে ২০২২ ০৭:৫২ অপরাহ্ন
চিকিৎসক সংকট আর অচল মেশিনে ধুকে ধুকে চলছে শেবাচিম

চিকিৎসক সংকট আর রোগ নির্ণয়ের অচল মেশিনের কারণে ধুকে ধুকে চিকিৎসা সেবা চলছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দীর্ঘদিন ধরেই এ অবস্থা চলতে থাকায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবা। অভিযোগ রয়েছে ব্যাক্তি মালিকানাধীন ল্যাবের সাথে হাসপাতালের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে বছরের পর বছর এ অবস্থা থেকে উত্তরণ হচ্ছে না হাসপাতালটি। কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।


হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শেবাচিম হাসপাতালে প্রায় ৪৫ শতাংশ চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালের ২২টি ইউনিটে মোট ৪৫০টি মেশিনের মধ্যে পুরোপুরি অচল রয়েছে ৮৫টি আর মেরামতযোগ্য আছে ৭৪টি মেশিন। হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি ২০০৭ সালে চালুর পর ৯ বছর মোটামুটি চললেও গত ৬ বছর ধরে বিকল রয়েছে মেশিনটি। এছাড়া একমাত্র সিটি স্ক্যান মেশিনটিও গত ৪ বছর ধরে বন্ধ। অভিযোগ উঠেছে সরকারি মেশিনগুলো যখন অচল, তখন হাসপাতালের আশপাশে একের পর এক গড়ে উঠছে ব্যক্তি মালিকানার ল্যাব। রোগীদের অভিযোগ সরকারি মেশিন নষ্টের অজুহাত দেখিয়ে বেশি টাকায় বাধ্য করা হয় বাইরের ল্যাবে পরীক্ষা করাতে। এসব ল্যাবের সঙ্গে হাসপাতালের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটও গড়ে উঠেছে। অথচ প্রতিদিন ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণ বেশি রোগী সেবা নেয় এই হাসপাতাল থেকে। শেবাচিম হাসপাতালের আউটডোর ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. সৌরভ সূতার বলেন, দক্ষিণাঞ্চল ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন জেলার রোগীরা উন্নত চিকিৎসা নিতে শেবাচিম হাসপাতালে আসেন। কিন্তু রোগীর তুলনায় হাসপাতালে ডাক্তার সংকট রয়েছে। তার ওপরে আবার অনেক রোগ নির্ণয় মেশিন বিকল অবস্থায় রয়েছে। এতে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।


হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের দাবী, হাসপাতালের বেশিরভাগ মেশিনই অচল, তা মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। আবার সেবার মান নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। দক্ষিণাঞ্চলের রোগীদের উন্নত কথা চিন্তা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে হস্তক্ষেপ করা উচিত।


বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) এর পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের কিছু কিছু মেশিন বিকল অবস্থায় রয়েছে এবং কিছু মেশিন মেরামত যোগ্য স্বীকার কওে তিনি জানান, এসব মেশিন মেরামত করতে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে ৩৩টি মেশিনের ১৩৫টির চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।