আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী বিভাগে চিকিৎসক নেই চার বছর ধরে। নারীদের সামান্য অসুখ হলেই চিকিৎসা নিতে তাদেরকে যেতে হয় ৩৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে জেলা সদরে। এনিয়ে একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের লোকজনদেরকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানাগেছে, হাসপাতালটিতে ২০১৫ ইং সালের ৬ ডিসেস্বর গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ কাজী মবিনা আক্তার যোগদান দিয়েছিলেন। এরপর তিনি অনিয়মিত ভাবে হাসপাতালে থাকতেন, এতে রেগিরা কিছিটা হলেও সেবা পেতেন। কিন্তু ২০১৮ ইং সালের ১৪ জানুয়ারি তার বদলী হয়ে গেলে এখন পর্যন্ত গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়ন করা হয়নি এখানে।
খোঁজনিয়ে জানাগেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৭ ইং সালের ৫ সেপ্টম্বর সর্বশেষ সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এরপর আর একটিও অপারেশন হয়নি।
এদিখে ৪ সেপ্টবর একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় জনবল সংকট নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হলে জুনিয়র কনসালটেন্ট (এন্যাসথেসিওলজি) ডাঃ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ভূইয়া ও মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক) ডাঃ মোঃ সাইফুল আলম যোগদান করেন। কিন্তু গাইনী চিকিৎসক পদায়ন না করায জুনিয়র কনসালটেন্ট (এন্যাসথেসিওলজি) কোন কাজেই আসছে না। পাঁচ ইউনিয়ন ও এক পৌর সভার জনসংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষাধিক। তাদের সরকারি চিকিৎসা সেবার মাধ্যম ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখানে ৩৪ জন চিকিৎসক-কর্মচারি পদায়ন থাকলেও দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ১২ জন বাকি পদগুলো শুন্য। এ জনবলে নিশ্চিত হচ্ছে না হাওরঅঞ্চলবাসির সেবা।
হাসপাতাল সুত্রে জানাগেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন চিকিৎসকের বিপরিতে কর্মরত আছেন ৫ জন, ১৪ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সের বিপরিতে আছেন ৬ জন। ৫ জন অফিস সহায়কের বিপরিতে আছে একজন প্রায তিন বছর ধরে নৈশ্য প্রহরি নেই। চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে গাইনী বিভাগটিও বন্ধ। গর্ভবতী নারীদের নানা বিড়াম্ভনা পোহাতে হচ্ছে। অনেক সময় মাতৃত্বের সাধ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে মায়েরা।
আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার আনিসুর রহমান জানান, কিছুদিন আগে তার ছোট বোনের সন্তান প্রসবের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কোন চিকিৎসাসেবা দেয়ার চেষ্টা না করেই রেফার করা হয় হবিগঞ্জ সদরে। কিন্তু হবিগঞ্জ সদরে পৌছার সাথে সাথেই গর্ভের কন্যা সন্তানটি মারা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী চিকিৎসক তাকলে হয়তো বাচ্চাটিকে বাঁচানো সম্ভব হতো। তাই যতো দ্রুত সম্ভব আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান এলাকাবাসী।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।