মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক ৪৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় বুধবার তাদের ফেরত পাঠানো হয়। মালয়েশিয়ার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা সংস্থা (একেপিএস) জানিয়েছে, বিমানবন্দরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করায় ৬৮ বিদেশিকে আটক করা হয়, যার মধ্যে ৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক। সংস্থাটি জানায়, আটক ব্যক্তিরা পর্যটক হিসেবে প্রবেশের দাবি করলেও তারা ইমিগ্রেশন কাউন্টারের দিকে না গিয়ে বিমানবন্দরের খাবারের দোকান ও অন্যান্য জায়গায় ঘোরাফেরা করছিলেন এবং বিশেষ কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলে সন্দেহ করা হয়।
পরবর্তীতে ১৬ জন পাকিস্তানি, ৪৫ জন বাংলাদেশি ও সাতজন ভারতীয় নাগরিককে কেএলআইএ ইমিগ্রেশন অপারেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশের অনুমতি না দিয়ে নোটিশ টু লিভ (এনটিএল) দেওয়া হয়। ফলে নির্ধারিত ফ্লাইটে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
একেপিএস জানিয়েছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সর্বোচ্চ সংখ্যক এনটিএল রেকর্ড করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেএলআইএ নজরদারি দল দুই হাজার ৬৫৪ বিদেশিকে পরীক্ষা করেছে, যার মধ্যে ৯০০ জন প্রকৃত পর্যটক না হওয়ায় তাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যাতে অবৈধ উপায়ে কেউ প্রবেশ করতে না পারে। এতে করে যারা প্রকৃত পর্যটক নন কিংবা পর্যাপ্ত কাগজপত্র নেই, তাদের জন্য প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে, এই ঘটনার পর বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মালয়েশিয়ায় বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যাদের অবস্থান রয়েছে, তারা কঠোর অভিযানের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি কমিউনিটির একাধিক নেতা বলছেন, বিমানবন্দরে আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ বৈধ শ্রমিক বা কর্মসংস্থানের সন্ধানে গিয়েছিলেন, তবে কাগজপত্রের জটিলতার কারণে তারা প্রবেশের অনুমতি পাননি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আটক হওয়া ব্যক্তিদের আইনগত সহায়তার জন্য কাজ করছে। তবে দূতাবাস থেকে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া মালয়েশিয়ায় না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা মালয়েশিয়ায় যেতে চান, তাদের অবশ্যই বৈধ ভিসা, কাজের অনুমতি ও যথাযথ কাগজপত্র নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানো হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।