রুশ-আমেরিকা সংঘাত: যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেন, মার্কিন প্রস্তাবে রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়গুলোর যথাযথ প্রতিফলন নেই। মস্কো মনে করে, এই প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয় এবং এটি গ্রহণযোগ্য হবে না। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিয়াবকভ স্পষ্ট করেছেন যে, মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় রাখেনি, ফলে এই প্রস্তাব কার্যকর হতে পারে না।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন এবং হুঁশিয়ারি দেন যে, যুদ্ধবিরতি না মানলে রাশিয়ার তেলের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

অন্যদিকে ইউরোপীয় কমিশন ইউক্রেনকে ৩৫০ কোটি ইউরো সহায়তা দিয়েছে। ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর মধ্যে ৩১০ কোটি ইউরো সহজ শর্তের ঋণ এবং ৪০ কোটি ইউরো অনুদান। এই সহায়তা ইইউর ইউক্রেন ফেসিলিটি প্রোগ্রামের আওতায় এসেছে, যার মাধ্যমে ২০২৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ হাজার ইউরো সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

কিয়েভ এখন পর্যন্ত ইইউ থেকে ১৬০০ কোটি ইউরো সহায়তা পেয়েছে। দেশটির সরকার বলছে, এই অর্থ ইউক্রেনকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রক্ষায় সহায়তা করছে। তবে মস্কো এখনও এই অর্থায়নের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডে রাশিয়ার ৮৪০ কোটি ডলারেরও বেশি সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সুইস সরকার জানিয়েছে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নতুন করে আরও ১৮০ কোটি ডলারের সম্পদ চিহ্নিত করে জব্দ করা হয়েছে।

জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি, দামি গাড়ি এবং শিল্পকর্ম। ইউরোপের অন্যান্য দেশও রুশ সম্পদ জব্দের বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে রাশিয়া বলছে, এসব পদক্ষেপ তাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে পারবে না, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি হবে।

এদিকে রুশ-আমেরিকা দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রায় পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। যদিও রাশিয়া বলছে, তারা পশ্চিমাদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং নিজেদের স্বার্থের প্রশ্নে আপস করবে না।