সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের একটি বেড়ের নিমগাছ থেকে সাইকেল মেকানিক অনিমেষ সরকারের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবার দাবি করছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। শনিবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল, জুতা এবং পোশাক আশপাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
অনিমেষ সরকার পেশায় সাইকেল মেকানিক ছিলেন এবং লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামে তার বাড়ি। তার মা শেফালী সরকার ও স্ত্রী সঞ্জিতা সরকার জানান, প্রতিবেশী মৃত ওমর মল্লিকের ছেলে অহিদ মল্লিক ও বিএনপি নেতা আঃ মালেক মল্লিক দীর্ঘদিন ধরে অনিমেষকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল। তাদের অভিযোগ, পুকুরের পানি সেচ নিয়ে শুরু হওয়া বিরোধ ক্রমশ মারধর ও হুমকিতে রূপ নেয়।
সঞ্জিতা সরকার বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে অনিমেষ ঢাকায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু রাতে দোকান থেকে ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হন। গভীর রাতে ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের গাছে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় বাবলু মোল্লার বাড়ির ছাদ থেকে অনিমেষের মোবাইল, মানিব্যাগ, পোশাকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বাবলু দাবি করেন, কীভাবে এসব জিনিসপত্র তার ছাদে এল তা তিনি জানেন না।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত অহিদ মল্লিকের স্ত্রী লাভলী বলেন, পুকুরের পানি নিয়ে বিরোধের সময় অনিমেষ ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসলে ধাক্কায় পুকুরে পড়ে যান। তবে তারা তার সঙ্গে কোনো রকম খারাপ ব্যবহার করেননি বলে দাবি করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নোমান হোসেন বলেন, এটি হত্যা না আত্মহত্যা, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। তবে পরিস্থিতি ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতেই প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে বলে আশা করছেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।