টেকনাফের উপকূল দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ৩০ জন শিশুসহ ৩৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ। বুধবার বিকেলে বাহারছড়ার নোয়াখালী পাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক রোহিঙ্গাদের মধ্যে আটজন নারী ও ৩০ জন শিশু রয়েছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পুলিশ জানায়, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছিল।
টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শোভন কুমার শাহ জানান, সমুদ্রপথে আসা এসব রোহিঙ্গা বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিষয়ে উচ্চপদস্থ কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে ৫ জানুয়ারি টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের মুন্ডারডেইল ঘাট এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ ৩৬ জন রোহিঙ্গা বিজিবির হাতে আটক হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এহসান উদ্দিন বলেন, অনুপ্রবেশের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের জন্য মিয়ানমারের উপকূলীয় এলাকাগুলি থেকে ট্রলার ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক সময় প্রতিকূল আবহাওয়া ও নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি এড়িয়ে তারা এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা শুরু করে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বাড়ার পর থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখেরও বেশি। এই ধরনের অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কারণে এলাকায় নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হতে পারে। এ কারণে তারা প্রশাসনের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তি রক্ষায় স্থানীয় জনগণও নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতা করছে।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এদিকে আটক রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।