ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক্সপোজার সংশোধনীর প্রজ্ঞাপন জারি করার পর শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের আভাস দিলেও তা স্থায়ী হয়নি। বরং আবারও টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২১ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস মূল্যসূচক ও লেনদেন কমলো। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকের এক্সপোজারে সংশোধনী এনে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামত এবং পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তালিকাভুক্ত নয় এরূপ সিকিউরিটিজে ব্যাংকের বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ হিসাবায়নে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই প্রজ্ঞাপনের ফলে এখন থেকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের (একক ও সমন্বিত) বিনিয়োগ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে নন-লিস্টেড কোম্পানি অর্থাৎ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন প্রতিষ্ঠানের ইক্যুইটি শেয়ার, নন-কনভার্টেবল প্রিফারেন্স শেয়ার, নন-কনভার্টেবল বন্ড, ডিবেঞ্চার, ওপেন-ইন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকে ব্যাংকের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ (ক্যাপিট্যাল মার্কেট এক্সপোজার) হিসেবে গণ্য করা হবে না। শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারির পর রোববার (১৯ মে) ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক একশ পয়েন্টের ওপরে বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের পরিমাণ। কিন্তু সোমবার (২০ মে) থেকে আবার পতনের ধারায় ফিরেছে শেয়ারবাজার।
সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছিল ৫৯ পয়েন্ট। আর মঙ্গলবার এ সূচকটি ৩৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৩৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্যসূচকে এই উত্থানের দিনে ডিএসইতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৭টির এবং দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির।
মূল্যসূচক ও সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে মাত্র ৩৫১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৮৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসাবে আজ লেনদেন কমেছে ৩৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। বাজারটিতে টাকার পরিমাণে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রানার অটোমোবাইলের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ফরচুন সুজ এবং ১২ কোটি ৮১ লাখ টাকা লেনদেনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে এসকে ট্রিমস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ব্র্যাক ব্যাংক, ডরিন পাওয়ার, ইষ্টার্ণ কেবলস, ন্যাশনাল টিউবস, এস্কয়ার নিট কম্পোজিট এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স ৪৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৭০২ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৫১ লাখ টাকার। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ১১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।