
প্রকাশ: ৬ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৩২

সুচিত্রা সেন শুধু একটা নাম নয়। নামটি নারী বাঙালি হৃদয়ে একটা মিথ হয়ে গেছে। বাঙালিদের কাছে নায়িকা শব্দটির সমার্থক তিনি। প্রেম, হাসি, কান্না, স্ত্রী-সংসার, বাঙ্গালিয়ানা, মাতৃত্ব, মমতা আর আবেদনের প্রাণবন্ত নাম সুচিত্রা সেন। তার রূপ-অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হয়ে আছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম। বহুকাল ছিলেন না অভিনয়ে। তবু বিন্দুমাত্র ভাঁটা পড়েনি তার আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তায়। চিরসবুজ এই মহানায়িকার আজ জন্মদিন। বেঁচে থাকলে এবারে ৮৮ বছরে পা রাখতেন সুচিত্রা। বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তির জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি রইল।
সুচিত্রা কিন্তু সুচিত্রা ছিলেন না আগে। ১৯৫১ সালে পরিচালক সুকুমার রায় যখন এই নায়িকাকে আবিষ্কার করলেন তখন তার নাম ছিল রমা সেন। এ বিষয়ে পরিচালক সুকুমার রায় একবার বলেছিলেন, ‘১৯৫১ সালে সাত নম্বর কয়েদী’ ছবির জন্য নতুন মুখ খুঁজছি। এমন সময় অসিত চৌধুরী আমাকে বললেন, একটি ভালো শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে আছে। মনে হয় সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে খুব নাম করবে। তার কথায় মেয়েটিকে পাঠিয়ে দিতে বললাম। প্রথম দিন ওর স্বামী দিবানাথ সেনের সঙ্গে এসেছিল দেখা করতে অরোরা স্টুডিওতে। দেখলাম, ছিপছিপে চেহারায় ডাগর ধরনের ওর চোখ। চোখ দুটি বড় সুন্দর আর খুব এক্সপ্রেসিভ। চাহনিতে স্বচ্ছ গভীরতা। মিস্টি হাসিতে সারা মুখখানা যেন উচ্ছলতায় ভরে যায়। এক নজরেই পছন্দ হয়ে গেল। কণ্ঠস্বরও বেশ মিষ্টি। কথার মধ্যে একটু বাঙাল টোন আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নিতে রাজি হয়ে গেলাম।’
‘সাত নম্বর কয়েদী’ ছবিতে অভিনয় করার পর সুচিত্রা সেন পিনাকী মুখার্জি পরিচালিত ‘সংকেত’ ছবিতে অভিনয় করেন। তখনও তিনি ‘সুচিত্রা সেন’ নামে পরিচিত হননি। এর পরের ছবি অর্থাৎ নীরেন লাহিড়ীর ‘কাজরী’ ছবির মাধ্যমে ১৯৫২ সালে রমা সেন পাল্টিয়ে ‘সুচিত্রা সেন’ নামে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। অবিভক্ত ভারতের বাংলাদেশের পাবনা জেলাতে ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রমা দাশগুপ্ত ওরফে সুচিত্রা সেন। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পাবনা শহরেই ছিল তার শিক্ষাজীবন। এছাড়াও তার আরো একটি পরিচয় হচ্ছে তিনি কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী।

ইনিউজ ৭১/এম.আর