রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে খুবই সতর্ক। কোন ছাত্র ভর্তিচ্ছুদের র্যাগিং দিলে বা র্যাগিং দেওয়ার কোন প্রমাণ পেলে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, বড় ভাই আসলে তাকে সালাম দিতে হবে। সম্মান করতে হবে। এগুলো অপসংস্কৃতি। এই অপসংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভর্তিচ্ছুদের কোন ধরনের হয়রানি বা র্যাগিংয়ের খবর পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন ছাত্র র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি মেস মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক। মেস মালিক সমিতি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা নীতিগত জায়গা থেকে ভর্তিচ্ছুদের থেকে কোন ধরনের অর্থ নেওয়া হবে না। এরপরেও মেস মালিকরা যদি গোপনে অর্থ নিয়ে থাকে তাহলে আমাদের বা ভতিচ্ছুদেরও কিছু করার থাকবে না। অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বা বাধ্য হয়েও তারা টাকা দিতে পারে। অসদুপায়ে কোন ভর্তিচ্ছু থেকে টাকা না নেওয়া হয় তার জন্য বিশ্বববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবার দোকানগুলোতে ভর্তিচ্ছু বা অবিভাবকদের থেকে বেশি টাকায় খাবার বিক্রি করার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, নির্ধারিত দাম উল্লেখ করে চার্ট করে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত দামের বাইরে কেউ বেশি দাম নিতে পারবে না। এর বাইরে কোন দোকানদার বেশি দাম নিলে বা অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য সারাক্ষণ ভ্রামমাণ ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হবে।
ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় রাবি প্রশাসন:
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মহিলা অভিভাবকদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম দিকের ছাত্রী জিমনেশিয়ামে রাত্রী যাপনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে পর্রীক্ষা চলাকালে শিক্ষাথীদের মহিলা অভিভাবকদের জন্য শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র ও পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্য কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন উন্মুক্ত থাকবে।
এবছর ভতিচ্ছুদের সহায়তায় বাইরের মেসগুলোতে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হবে না এনিয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় সেক্ষেত্রে প্রক্টরিয়াল বডিকে জানাতে আহŸান করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে কোনো ছাত্র সংগঠন, জেলা সমিতির ব্যানারে হেল্প ডেস্ক বা স্টল রাখা হবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ১৬ টি হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। থাকবে সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ থেকে ২২ অক্টোবর। বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) ও লিখিত উভয় পদ্ধতিতে এবারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জালিয়াতি, অপতৎপরতা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এবারের পরীক্ষায় তিনটি ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৭১৩ টি যার বিপরীতে ভর্তিচ্ছু কর্তৃক এ ইউনিটে ৩১ হাজার ১২৯ জন, বি ইউনিটে ১৫ হাজার ৭৩২ জন এবং সি ইউনিটে ৩১ হাজার ২২৯ জন চূড়ান্ত প্রতিযোগী রয়েছেন।
২১ অক্টোবর প্রথম দিন সকাল ০৯ টা থেকে ১০ টা ৪৫ পর্যন্ত ইউনিট-অ, গ্রুপ-১ এর (রোল ১০০০১ থেকে ২৫৫৬৫ পর্যন্ত), সকাল ১১ টা ৪৫ থেকে ০১ টা ৩০ পর্যন্ত ইউনিট-অ এর গ্রুপ-২ এর (রোল ৫০০০১ থেকে ৬৫৫৬৪ পর্যন্ত), এরপর বিকেল ০৩ টা থেকে ০৪ টা ৪৫ পর্যন্ত, ইউনিট-ই এর গ্রুপ-১ এর (বাণিজ্য) রোল ১০০০১ থেকে ১৮৬৩৭ পর্যন্ত এবং ইউনিট-ই এর গ্রুপ-২ (অ-বাণিজ্য) রোল : ৮০০০১ থেকে ৮৭০৯৫ এর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পর দিন ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ০৯ টা থেকে ১০ টা ৪৫ পর্যন্ত ইউনিট-ঈ এর গ্রুপ-১ (বিজ্ঞান) রোল : ১০০০১ থেকে ২৫২৫৭, সকাল ১১ টা ৪৫ থেকে ০১ টা ৩০ পর্যন্ত, ইউনিট-ঈ এর গ্রুপ-২ (বিজ্ঞান) রোল : ৫০০০১ থেকে ৬৫২৫৬ পর্যন্ত ও ইউনিট-ঈ এর গ্রুপ-৩ (অ-বিজ্ঞান) রোল : ৮০০০১ থেকে ৮০৭১৬ পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে প্রতিটি পরীক্ষার সময়কাল ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট। এরমধ্যে প্রথম ৫০ মিনিট এমসিকিউ, পরবর্তী ১৫ মিনিট এমসিকিউ উত্তরপত্র সংগ্রহ ও লিখিত এসএকিউ পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রদান করা হবে। শেষ ৪০ মিনিট লিখিত এসএকিউ পরীক্ষা হবে। এমসিকিউ পরীক্ষার পরবর্তী ১৫ মিনিট পরীক্ষা হলের বাইরে যাওয়া যাবে না। ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট িি.িৎঁ.ধপ.নফ থেকে জানা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা, চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. লায়লা আরজুমান বানু, জন সংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার প্রমুখ।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।