যৌন হয়রানির অভিযোগে রাবি শিক্ষককে অব্যহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ৩রা জুলাই ২০১৯ ০৪:২৪ অপরাহ্ন
যৌন হয়রানির অভিযোগে রাবি শিক্ষককে অব্যহতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অভিযুক্ত শিক্ষককে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রমে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার বিকেলে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী। এর আগেও সান্ধ্যকোর্সের কয়েক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর অভিযুক্ত শিক্ষককে ওই ব্যাচের কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরি থাকাকালীন ‘নারী ঘটিত’ কারণে জড়িয়েছিলেন অভিযুক্ত বিষ্ণুকুমার অধিকারী। সেসময় ডরমেটরির অন্য ফেলোদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সেখান থেকে বের করে দেন ডরমেটরির তৎকালীন ওয়ার্ডেন।

আইইআর সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ জুন আইইআর পরিচালক বরাবর ৪র্থ এক ছাত্রী যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দেন। একই দিন ২য় বর্ষের আরেক ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে একই অভিযোগ দেন। পরে ২৭ জুন এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ জুন অভিযুক্ত শিক্ষককে ২য় ও ৪র্থ বর্ষের সকল শিক্ষাকার্যক্রম থেকে তাকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।  

পরে গত ২৮ জুন শুক্রবার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে অভিযোগকারী ছাত্রীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে এই মর্মে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় দুটি জিডি করে দুই শিক্ষার্থী। এরপর গত রবিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের সবোর্চ্চ শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন করেন আইইআরসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে সোমবার আইইআরের ২য় ও ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও বিষ্ণুকুমার অধিকারীর অব্যহতি চেয়ে আবেদনপত্র দেয়। 

এসময় তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পছন্দের শিক্ষার্থীকে নম্বর বাড়িয়ে অপছন্দের শিক্ষার্থীদের নম্বর কমিয়ে দেওয়া, চেম্বারে ডেকে হয়রানি, ফেইসবুকে বিভিন্ন ব্যাচের গ্রæপের কথপোকথনের স্ক্রিণশট নিয়ে হয়রানির অভিযোগও খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানান। এছাড়াও এদিন আইইআরের তিন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের একটি কোর্সের খাতা পুর্নমূল্যায়নেরও লিখিত আবেদন জানান।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারী বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ২য় ও ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়ার মিটিংয়েও আমাকে রাখা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত বিষ্ণুকুমার অধিকারীকে সব ব্যাচ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের অনেক ব্যস্ততা যাচ্ছে। আমাদের অনুষদে এখন পরীক্ষা হচ্ছে। কাল-পরশু এটা নিয়ে মিটিংয়ে বসব।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব