ফের প্রশ্নফাঁস, আজকের কওমির পরীক্ষা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল ২০১৯ ০১:২৮ অপরাহ্ন
ফের প্রশ্নফাঁস, আজকের কওমির পরীক্ষা স্থগিত

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর নিয়ন্ত্রণাধীন কওমি মাদ্রাসাগুলোর সরকারি বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে চলমান দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফের ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে দাওরায়ে হাদিস জামাতের বৃহস্পতিবারের আবু দাউদ শরিফের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সনদের সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দুবার ফাঁস হওয়া নিয়ে হোঁচট খেল এ সংস্থাটি। এদিকে প্রশ্নপত্র ফের ফাঁস হওয়া নিয়ে চলছে অনলাইনে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা। কওমি মাদ্রাসাগুলোর নিয়ন্ত্রণাধীন কেন্দ্রীয় বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল কেন্দ্রীয় সদস্য ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া গওহরডাঙ্গার চেয়ারম্যান মুফতি রুহুল আমিন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে দাওরায়ে হাদিস জামাতের আজকের (বৃহস্পতিবার) আবু দাউদ শরিফের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ের পরীক্ষা পুনরায় কবে অনুষ্ঠিত হবে তা জানতে চাইলে তিনি জানান, সে সম্পর্কে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী বিষয়গুলোর পরীক্ষা ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে কিনা সে বিষয়ে আজ একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। তারাই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবেন আগামী বিষয়গুলোর পরীক্ষা ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে কিনা, যা পরে আপনাদের জানানো হবে। সূত্র জানায়, এর আগে বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস পরিচালিত ফরিদাবাদসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বড় মাদ্রাসায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এ কারণ কেন্দ্রীয় কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ‘আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ চলমান দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) পরীক্ষা বাতিল হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো গত ২৩ এপ্রিল থেকে পুনরায় পরীক্ষা শুরু হয়। সনদের সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে হোঁচট খেয়েছিল এ সংস্থাটি।

ফলে গত ১২ এপ্রিল সকালে ঢাকার মতিঝিলে কার্যালয়ে সংস্থাটির কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে একটি জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে পরবর্তী সব পরীক্ষা স্থগিত ও অনুষ্ঠিত সব পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করে নতুন তারিখ ঘোষণা হয়। ওই দিন শনিবার বোর্ডের জরুরি বৈঠকে প্রশ্নফাঁসের উৎস খুঁজতে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া গওহরডাঙ্গার চেয়ারম্যান মুফতি রুহুল আমিনকে সভাপতি করে এ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া ও মাওলানা মাহফুজুল হক।

প্রসঙ্গত জাতীয় সংসদে ‘কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিসের সনদকে আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর অধীনে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল-২০১৮’ পাস করার পর প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চলতি বছরে দেশের ৬টি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রায় ২৬ হাজার ৭২১ শিক্ষার্থীর আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। গত ৮ এপ্রিল থেকে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা আরম্ভ হয়ে ১৮ এপ্রিল পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল ২০১৭ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি শিক্ষা সনদের মান ঘোষণা করার পর হাইআতুল উলইয়া অধীনে ৬ বোর্ডের সম্মিলিত দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা ইতোপূর্বেও দুবার (১৬-১৭ ও ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) অনুষ্ঠিত হয়েছে।