প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:১৫
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৫টায় শেষ হয়। ভোটগ্রহণের পর এবার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা চলছে। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে মোট ৫৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ১০২ জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিতর্ক দেখা দেয়। কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। বিকেল ৪টার দিকে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
অন্যদিকে, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ভোট প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে, যা শিক্ষার্থী ও প্রশাসন উভয়ের জন্যই উদ্বেগের বিষয়।
নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭ জন। ২১টি হলে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে ১১টি ছেলে এবং ১০টি ছাত্রী হলে ভোটকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। ভোট প্রক্রিয়া সুষ্ঠু রাখতে প্রতিটি হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা, পোলিং অফিসার এবং সহায়ক নিযুক্ত করা হয়েছে।
ভোটগ্রহণে অংশগ্রহণকারীরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উৎসাহ ও উত্তেজনার সঙ্গে ভোট দিয়েছেন। প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের মধ্য দিয়ে প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত প্রকাশের জন্য সক্রিয়ভাবে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন।
নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় পর এই নির্বাচন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহের মাত্রা ছিল উঁচু।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে। ফলাফলের অপেক্ষায় শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা উত্তেজিত থাকলেও, প্রশাসন যথাযথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
নির্বাচনের এই ধারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও অংশগ্রহণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শিক্ষার্থীরা ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রিয় প্যানেলকে ক্ষমতায় আনার সুযোগ পাচ্ছে, যা শিক্ষাঙ্গনের রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।