ছয় দফা দাবির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি আন্দোলনরত পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। বৈঠক শেষে তারা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় তারা আবারও কঠোর কর্মসূচির দিকে অগ্রসর হবেন। বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত সচিব রেহানা ইয়াছমিন। বৈঠক শেষে প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেন, আমরা আজ মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলাম সমাধানের আশায়, কিন্তু বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আজকের আলোচনায় আমাদের সন্তুষ্টি নেই, তাই আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখব।
প্রতিনিধি জোবায়ের পাটোয়ারী অভিযোগ করেন, আমাদের সঙ্গে বারবার প্রতারণা করা হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব নিজেই জানতেন না যে শিক্ষা উপদেষ্টা থাকার কথা ছিল বৈঠকে। এমন অগোছালো ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে বাধ্য করা হচ্ছে।
কারিগরি শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের প্রমোশন কোটা বাতিল, টেক পদের জন্য ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করা, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতদের নিয়োগ, বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, মাধ্যমিকে কারিগরি শিক্ষা চালু ও ডিপ্লোমাধারীদের শিক্ষক হিসেবে সুযোগ এবং সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ।
এর আগে বুধবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। সেইসঙ্গে সারাদেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধের মাধ্যমে সংহতি জানান। বিকেলে আন্দোলনস্থলে পৌঁছে ডিজি শোয়াইব আহমাদ খান কিছু দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তা লিখিতভাবে না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি থেকে সরে আসেননি।
ছাত্ররা বলেন, প্রতিটি দাবির বিষয়ে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করে তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। শুধু মৌখিক আশ্বাসে বিশ্বাস নেই।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে রেল অবরোধ ও অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে আপাতত আন্দোলন শিথিল করে শিক্ষার্থীরা আবারও আলোচনার টেবিলে বসেন।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি পূরণে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না এলে আগের চেয়ে আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।