যমুনা সেতু আঞ্চলিক জাদুঘর এখন শুধু একটি সংগ্রহশালা নয়, বরং জীববৈচিত্র্যের এক অনন্য প্রদর্শনী কেন্দ্র। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় অবস্থিত এই জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রাণির সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে, যা এটিকে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ জীববৈচিত্র্য সংগ্রহশালায় পরিণত করেছে। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরটি মূলত যমুনা সেতুর নির্মাণকালীন তথ্য সংরক্ষণের জন্য গড়ে উঠলেও বর্তমানে এটি গবেষক ও প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে মেছো বাঘ, চিত্রা হরিণ, বন বিড়াল, গন্ধগোকুল, নীলগাই, শকুন, মাছরাঙা, চিল, মহাশকুন, সুন্দরবনের সাদা বক, গাঙ্গেয় ডলফিন, শাপলা মাছ, দারাজ সাপ, গোখরা, গুইসাপ, হলুদ মাথার কচ্ছপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পাখির বাসা, ডিম, কীটপতঙ্গ এবং নদীর বাস্তুসংস্থানের নমুনা।
প্রতিদিন দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শনার্থী এখানে আসেন। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা মানিক নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এখানে এসে অনেক নতুন কিছু দেখতে ও জানতে পেরেছি, যা আগে কখনো দেখিনি। আরেক দর্শনার্থী মো. রশিদ শেখ বলেন, জাদুঘরটি প্রাণিজগত সম্পর্কে শেখার এক অসাধারণ জায়গা। এখানে এসে অনেক নতুন তথ্য জানতে পেরেছি।
জাদুঘরের কিউরেটর মো. জুয়েল রানা জানান, তাদের লক্ষ্য শুধু প্রাণিদের সংরক্ষণ করা নয়, বরং প্রকৃতি ও প্রাণিসম্পদ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে, যা তাদের প্রকৃতিপ্রেমী হতে উদ্বুদ্ধ করবে। তিনি আরও যোগ করেন, প্রতিনিয়ত জাদুঘরে নতুন নমুনা সংরক্ষিত হচ্ছে এবং সকলের সহযোগিতা পেলে এটি বিশ্বের সেরা জাদুঘরে পরিণত হবে।
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক হোসনে আরা পপি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রকৃতি ও প্রাণিসম্পদ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করবে। এটি শুধু একটি জাদুঘর নয়, বরং একটি জীবন্ত গবেষণাগার। জাদুঘরটি এখন শুধু টাঙ্গাইল বা বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং পুরো এশিয়া মহাদেশের জন্য এক গর্বের বিষয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।