প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ২০:৫৪
আসন্ন কুরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেছে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে দেশে এসেছে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রোববার প্রকাশিত তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, অর্থপাচার ও হুন্ডি প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্রিয় ভূমিকার ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্সের প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহে চলমান ইতিবাচক ধারা গত মার্চে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এনে দেয়, যার পরিমাণ ছিল ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার। সেই রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় এপ্রিলেও ভালো পরিমাণে রেমিট্যান্স আসে, তবে মে মাসের অর্জন তা ছাপিয়ে গেছে।
গত মে মাসে প্রবাসীরা প্রতিদিন গড়ে পাঠিয়েছেন প্রায় ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা প্রতিদিনের হিসেবে ১১৬৯ কোটি টাকার বেশি। এতে বোঝা যায়, ঈদের আগে দেশে প্রিয়জনদের হাতে টাকা পৌঁছে দিতে ব্যাপক হারে অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে—এই ১১ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২৭৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি।
রেমিট্যান্সের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। মে মাসে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি।
বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমেও এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। রেমিট্যান্স উৎস ও প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী মাসগুলোতেও রেমিট্যান্সে আরও নতুন রেকর্ড তৈরি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের নীতিগত সহায়তা ও প্রবাসীদের আস্থা বজায় থাকলে দেশের অর্থনীতিতে এই প্রবাহ একটি বড় অবদান রাখবে।