প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১৮:১১
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আশার আলো ছড়াতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। চলতি অর্থবছরে ঘোষিত ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের আওতায় জুন মাসেই পাওয়া যাচ্ছে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এই তৃতীয় কিস্তির ছাড় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে আইএমএফ-এর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর এই অর্থ ছাড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, নতুন বিনিময় হার নীতিমালার অংশ হিসেবে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছিল, যা শুরুতে আপত্তির মুখে পড়লেও পরে আইএমএফ গ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তরে একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। সম্মেলনে আইএমএফ-এর সঙ্গে ঋণ ছাড় সংক্রান্ত বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অর্থ ছাড়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও স্থিতিশীল হবে এবং সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে আস্থা ফিরে আসবে। একইসঙ্গে বিনিয়োগকারী এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের আস্থাও দৃঢ় হবে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য তিন বছরের একটি ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করেছিল। এই কর্মসূচির আওতায় ইতিমধ্যে দুটি কিস্তি ছাড় হয়েছে। আসন্ন তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের মাধ্যমে মোট ছাড়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
সরকারি সূত্র বলছে, এই অর্থ শুধু রিজার্ভে সহায়কই হবে না, বরং অর্থনীতির কাঠামোগত সংস্কারেও গতি আনবে। বিশেষ করে বিনিময় হার ব্যবস্থার পরিবর্তন, ব্যাংক খাতের স্বচ্ছতা এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে এই সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এখন দরকার এই অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে এই অর্থনৈতিক সহায়তার প্রতিটি ধাপ সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এই কিস্তি ছাড়ের মাধ্যমে একদিকে যেমন সংকটে থাকা ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরবে, অন্যদিকে দেশের আর্থিক ব্যবস্থার প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থাও আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।