কাউন্সিলর রব্বানী হত্যা, মৌলভীবাজারে নারীসহ তিনজন গ্রেপ্তার !

নিজস্ব প্রতিবেদক
এরফান হোছাইন. জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: বুধবার ১৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
কাউন্সিলর রব্বানী হত্যা, মৌলভীবাজারে নারীসহ তিনজন গ্রেপ্তার !

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গুলি করে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী হত্যার ঘটনায় মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন, যিনি হত্যার আগে রব্বানীর সঙ্গে হোটেলে অবস্থান করছিলেন। অভিযানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার গভীর রাতে এ অভিযান পরিচালিত হলেও বিষয়টি আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকাশ করেছে পুলিশ।  


গ্রেপ্তার তিনজনের বাড়ি খুলনায়। তবে তাঁদের নাম ও পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের কক্সবাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে এবং আগামীকাল বুধবার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।  


পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ জানান, হত্যার পর থেকেই অভিযুক্তদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। গোপন সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে জড়িত কয়েকজন মৌলভীবাজারে লুকিয়ে আছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার থেকে মৌলভীবাজারে অভিযান শুরু করা হয়। অবশেষে সোমবার গভীর রাতে ওই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।  


গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ওই নারী রব্বানীর সঙ্গে কক্সবাজারে ঘুরতে আসেন এবং একটি হোটেলে ছিলেন। গ্রেপ্তার অপর দুইজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।  


গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের ঝাউবাগানের কাঠের সেতুর কাছে গোলাম রব্বানীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রব্বানী খুলনা সিটির দৌলতপুর এলাকার বাসিন্দা এবং সদ্য সাবেক কাউন্সিলর। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর সহসভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ১২ সিটি করপোরেশনের অন্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁকেও অপসারণ করা হয়।  


এর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে খুলনা সিটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার এবং কক্সবাজারের বাসিন্দা মেজবাউল হককে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে। তাঁদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি হয়নি।  


স্থানীয় সূত্র জানায়, রব্বানী হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা ও রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি পুলিশ। এ ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  


আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে আরও অভিযানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে পুলিশ ও র‍্যাব একযোগে কাজ করছে।  


রব্বানীর পরিবার ও সহকর্মীরা দ্রুত বিচার ও প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে এই হত্যাকাণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। হত্যার সঠিক কারণ ও এর পেছনের শক্তি উদঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে আরও গতি আনার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।