চলতি অর্থবছর শেষ হতে এখনো দুমাস বাকি। এরই মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে। রোববার (১৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিতব্য ‘বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির’ সভায় প্রাক্কলিত বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য ওই সভায় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন।
উক্ত সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ছাড়াও বাজেট প্রণয়ন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের যে বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে তা মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৭৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা বেশি।
চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা রয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতিই ধরা হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপি’র সাড়ে ৫ শতাংশ।
সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭.২ শতাংশ। আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৫.৩ শতাংশ।
আগামী অর্থবছরে মোট আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৯.৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছর মোট আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে মোট আয় বাড়ছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের মোট আয়ের মধ্যে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি জিডিপির প্রায় ৮.৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছর এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া আছে। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হবে নতুন অর্থবছরের বাজেটে।
এছাড়া আগামী বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে নন-এনবিআর থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। কর বহির্ভূত রাজস্ব ৪৯ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সে হিসেবে ঘাটতি বাড়ছে ২৮ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার এডিপির প্রস্তাব করেছেন। আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছে ছিল আগামী অর্থবছরের বাজেট যেন ৭ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু করোনা এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে এটি আর সম্ভব হচ্ছে না। তবুও বাজেট যেভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের অর্থনীতি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।