বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনা বাংলাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। গতকাল (২৮ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত সংস্থা হত্যাকাণ্ডের কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে, যার মাধ্যমে দুজন হত্যাকারী শনাক্ত করা গেছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আরও বাকিদের শনাক্ত করতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের পূর্বে এবং পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তদন্ত সংস্থার মতে, লাশ পোড়ানোর আগে ঘটনাস্থলে যে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা পুরো দেশকে স্তম্ভিত করে। হত্যাকাণ্ডের এক পর্যায়ে ভিডিও ফুটেজে উঠে আসে এক ব্যক্তির নিথর দেহ, যাকে আগুনে পুড়িয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং দেশে তীব্র আলোচনার জন্ম দেয়।
অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম আরও বলেন, বর্তমানে তদন্তে নতুন তথ্য উঠে এসেছে এবং শনাক্তকৃত হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি আরও জানান, আশুলিয়ায় ঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তে গত ২৫ মে তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্টের ঘটনা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডগুলোর একটি। ঐদিন পুলিশের হাতে নিহত ছয়জনের লাশ গাড়িতে তুলে আগুনে পোড়ানো হয়, যা দেশে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে। তদন্ত সংস্থা জানায়, ঘটনার সময় একটি ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় ছিল এবং তাকে মারা যাওয়ার পরও পুড়িয়ে দেয়া হয়। এটি একটি ভয়াবহ এবং বিভীষিকাময় ঘটনা ছিল, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার তদন্তের নতুন পর্বে উঠে আসা এই ভয়াবহ ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারীদের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি দেশের জনগণকে আবারো তোলপাড় করেছে। এই হত্যা মামলার তদন্তের ফলাফল দেশের বিচারব্যবস্থার জন্য একটি বড় পরীক্ষাও হতে পারে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে।