প্রকাশ: ৫ এপ্রিল ২০২৩, ২৩:৫২
পরকীয়ার অভিযোগে বাহরাইন প্রবাসী যুবক ও গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ ৩ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। বুধবার ভুক্তভোগী প্রবাসী নুরুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে ৩ জনকে আটক করে কোর্ট হাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার ভোররাতে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাবরী মিয়ার বাড়িতে পরকীয়ার অভিযোগে নরুল হক নামের এক প্রবাসী ও এক গৃহবধৃকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেন। পরে তাদেরকে নিয়ে সালিশ করে স্থানীরা। সালিশে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই সেই গৃহবধুকে এক কাপড়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় সালিশদাররা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ এলাহাবাদ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ আবুল হাসেম সরকার(৫৫), মোঃ রমিজ উদ্দিন (৪৫), সাদেকুর রহমান (৩৫) কে আটক করেন। বুধবার ভুক্তভোগী নুরুল হক বাদী হয়ে ৬ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৫ জনসহ মোট ১১ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করলে আটক ৩ জনকে কোর্ট হাজতে চালান করা হয়। এজহার নামীয় অপর ৩ জন হলেন, আব্দুর রশিদ (৫৭), রমজান (৪৫) ও অহিদ মিয়া(৪৫)।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে নারী-পুরুষকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন এবং তাদের আটকে রেখে সালিশ করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই হয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনীকে না জানিয়ে। আইন হাতে নেয়ার প্রবনতা রোধে আমরা জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রবাসী নুরুল হক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে।
উল্লেখ্য- প্রায় ২/৩ বছর যাবৎ ভৈষেরকুট গ্রামের বাচ্চুমিয়ার পুত্র বাহরাইন প্রবাসী নূরুল হক(৩৬)'র সাথে মোহাম্মদপুর গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী মোহাম্মদ আলীর স্ত্রীর পরকীয়া চলে আসছিল। মঙ্গলবার ভোররাত ৩টায় ওই গৃহবধু নুরুল হককে মোবাইল ফোনে ডেকে তার ঘরে আনে। নূরুল হক বাড়ি থেকে বের হলে তার বড় ভাই মো. এনামুল হক তাকে অনুসরন করে ওই বাড়ি আসেন এবং গৃহবধুর শ্বশুর মো. আব্দুর রশিদ, দাদা শ্বশুর বাবরী মিয়াকে ডেকে এনে দু’জনকে ঘরে তালাবন্ধী করেন।
পরে বাড়ির লোকজন এসে পরকিয়ার অভিযোগে যুগলকে আটক করে প্রায় ৯ ঘন্টা গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে শারিরীক নির্যাতন চালায়। ঘটনার পর স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলা সালিশে উল্লেখযোগ্য কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই এক কাপড়ে গৃহবধুকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং নুরুল ইসলামকে তার ভাই ও স্বজনদের জিম্বায় ছেড়ে দেয়া হয়।