আশাশুনিতে প্রতিবন্ধী শিশুসহ মা-বাবাকে মারপিট করলেন চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: সোমবার ২৩শে আগস্ট ২০২১ ০৮:৫৬ অপরাহ্ন
আশাশুনিতে প্রতিবন্ধী শিশুসহ মা-বাবাকে মারপিট করলেন চেয়ারম্যান

আশাশুনি উপজেলার কুল্যায় ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে প্রকাশ্যে এক প্রতিবন্ধী শিশু ও তার মা-বাবা মারপিটের শিকার হয়েছেন। সোমবার (২৩ আগষ্ট) সকারে কুল্যা ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছেসহ বিভিন্ন দপ্তরে মারপিটের শিকার প্রতিবন্ধীর মাতা ফারজানা খাতুন বাদী হয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করে লিখিত আবেদন করেছেন। 


কুল্যা ইউনিয়নের আরার গ্রামের আল মামুনের স্ত্রী ফারজানা খাতুন বাদী হয়ে দাখিলকৃত আবেদন ও আশাশুনি প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের জানান, তার আড়াই বছর বয়সী পুত্র আশরাফুল আলম জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। সাথে সাথে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। করোনা কালীন সময়ে স্বামীর কাজ কাম না থাকা ও পুত্রের চিকিৎসা খরচ যোগাতে তারা হিমশিম খাচ্ছে এবং না খেয়ে, অর্ধাহারে দিন যাপন করছে। অনেকবার তারা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেতের কাছে গেলে তিনি ভ্রুক্ষেপ করেন না। 


তিনি বলেন, গত ঈদের সময় ৫০০ টাকা দেওয়া ছাড়া তিনি কোন সহযোগিতা ত্রাণ তাদেরকে দেয়নি। অনেক কাকুতি মিনতি করার পর তিনি পরিষদে যেতে বলেন। তারা শিশুকে নিয়ে ১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সোমবার বাড়িতে আসছিলেন। ইউনিয়ন পরিষদের কাছে পৌছে অফিস খোলা দেখে তারা অনেক আশা নিয়ে পরিষদে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যান। বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে আছি, আমাদের কিছু ব্যবস্থা করেন। এমন কথা বলার সাথে সাথে চেয়ারম্যান চৌকিদার দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে হুঙ্কার দেন। এরপর নিজেই চেয়ার থেকে উঠে এসে বাচ্চা কোলে পিতা মামুনকে ও বাচ্চাকে মারপিট করেন। স্ত্রী ফারজানা বাচ্চাকে ঠেকাতে গেলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর “কোথাও যেয়ে কিছু করার থাকলে করে নিস” বলে দূরদূর করে তাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। 


চেয়ারম্যানের অতর্কিত আক্রমন, মুখ খিস্তি করে গালিগালজের ঘটনা দেখে উপস্থিত লোকজন হতবাক হয়ে যায়। প্রতিবন্ধী শিশু ও পিতা-মাতার ক্রন্দনে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যানের আচরন খুবই ন্যাক্কার জনক। তার রুদ্রমূর্তি দেখে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ দূরছাই করে থাকে। চরমভাবে অপদস্ত ও নিগৃহীত অসহায় ফারজানা জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর এব্যাপারে প্রতিকার প্রার্থনা করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির দরখাস্ত পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশাশুনিকে নির্দেশ দিয়েছেন। 



অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেত সাংবাদিকদের জানান, শিশুটিকে নিয়ে তাকে চলে যেতে বললেও সে যায়নি, তখন বাধ্য হয়ে তাদেরকে বকাবকি ও হালকা মারপিট করা হয়েছে।