সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় মাইফুল নেছা(২৩) নামে ৪মাসের অন্তঃসত্বা গৃহবর্ধকে হাত, পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রাতের আধারে নদীতে ফেলে হত্যার চেষ্টায় স্বামী,শশুর,দেবরসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার দিন গত রাত ১২টার পরে ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি তার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে দায়ের করেছেন। মামলা নং ১,তারিখ ০১,০৮,২০২১ইং।
মামলায় আসামী করা হয়েছে, জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের বাসিন্ধা স্বামী আবু তাহের জান্নাত,শশুর সাজিদুল মিয়া,দুই দেবর জাকির হোসেন (২২) ও বাবুল মিয়া (২৫) এবং ননাই গ্রামের মামা শশুর আলী হোসেন (৪০)।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার।
গত শুক্রবার (৩০জুলাই) রাত ৮টায় উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদালারপাড় গ্রামে কারী মৃত নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। মাইফুল নেছা কারী মৃত নিজাম উদ্দিনের মেয়ে।
ঘটনার পর পরিবারের লোকজন মাইফুলকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে ঘা ডাকা দিয়েছে।
এদিকে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা খবর পেয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় হাসপাতালে গিয়ে মাইফুল নেছার সার্বিক খোঁজ খবর নেন ও আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন। এই ঘটনায় এলাকায় জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, ঘটনার পরপর খবর পেয়ে বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মোঃ শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভুক্তভোগীর স্বামী, শশুর, মামা শশুর ও দুই দেব কে আসামী করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। আমরা অভিযানে আছি।
উল্লেখ্য, আবু তাহের ও জান্নাতের সাথে র্দীঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর গত ৮মাস পূর্বে মাইফুল নেছার (২৩) সাথে আবু তাহের জান্নাতের (২৮) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের জান্নাত শশুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী ভোলাখালি গ্রামের এক ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সংসার করার পাশাপাশি একটি ঘরে পোল্ট্রি মোরগের ব্যবসা শুরু করে তার বাবা, দু ভাইকে নিয়ে।
৪-৫ মাস ভাল সংসার চলার পর গত মাস খানেক ধরে মাইফুলকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছিল স্বামী আবু তাহের। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ৪ মাসের অন্তঃসত্বা মাইফুল নেছাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
আরো জানা যায়, কিছু দিন পূর্বে বিষ খাইয়ে মেরেও ফেলতে চেয়েছিল এবং এনিয়ে বিচার শালিসে দোষীও হয় স্বামী আবু তাহের। পরে মাইফুল বাবার বাড়িতে চলে যায়।
এরপর গত শুক্রবার রাতে মেয়ে নিজ বাড়িতে টয়লেট গেলে মেয়ের স্বামী, শশুর ও দেবররা প‚র্ব পরিকল্পিত ভাবে তাকে মুখ চেপে ধরে হাত, পা বেধেঁ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাশে বাড়ির পাশে ভাঙ্গার খাল নদীতে ফেলে দেয়।
মেয়ের আসতে দেরী দেখে বাড়ি থেকে বের হয় সবাই। তখন গুংগানির শব্দ শুনতে পেয়ে পাশের বাড়ির আবুল হোসেন নদী কিনারে পানি ও কাঁদার মধ্যে থাকা অব¯’ায় বস্তার মুখ খুলে মাইফুলকে দেখে চিৎকার দিলেই সবাই ঝড়ো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।