প্রকাশ: ২৮ মে ২০২১, ১৭:৩৯
স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করায় শিশুসহ একই পরিবারের চারজনকে মারধর করেছে শ্রমিকরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে শ্রমিক নেতারা ওই যাত্রীদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়ে মারধরের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টা চালান। শুক্রবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল নগরীর রুপাতলী বাস বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে শিকার শামীম সিকদার (২৭) জানান, তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে বরিশাল নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কালিজিরা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি তার মা হাসনুর বেগম, ভাগ্নে-বৌ কারিমা ও ভাগ্নের সাত বছরের শিশুকন্যা মুনিয়াকে নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে জনপ্রতি ২৪০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাসে ওঠেন। কিন্তু সরকারি নিয়মানুযায়ী বাসের প্রতি দুই আসনের একটি খালি রাখার কথা থাকলেও সুপারভাইজর কোনো সিটই খালি রাখেননি। এমনকি পাশাপাশি যাত্রীদের দাঁড় করিয়েও নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, দেড়শ টাকার পরিবর্তে ২৪০ টাকা নিয়ে এভাবে ঝুঁকিতে যাত্রী পরিবহন করার প্রতিবাদ করলে এতে ক্ষিপ্ত হন সুপারভাইজার এবং মুহূর্তের মধ্যেই সুপারভাইজর, হেলপারসহ বাসস্ট্যান্ডের ১৫/২০ জন শ্রমিক মিলে বাসের সিটেই আমাকে মারধর করে। আমাকে বাঁচাতে গেলে শ্রমিকরা আমার মা, ভাগ্নে বৌ কারিমাকে লাঞ্ছিত করেন। ভাগ্নের সাত বছরের মেয়ে মুনিয়াকে হেলপার বাস থেকে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়।
বাসের অন্যান্য যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মাহিম পরিবহনের (গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৪৪৯৯৮) সুপারভাইজর মুন্নার নেতৃত্বে ব্যাপক মারধর করা হয়। শুধু ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাই নয় রুপাতলী বাস মালিক সমিতির শ্রমকিরাও তাদেরকে মারধর করেন। ওই যাত্রীকে সপরিবারে মারধরের পর বাসটি স্ট্যান্ড ছেড়ে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
রুপাতলী বাস মালিক সমিতির লাইন বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন শামীম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি এবং মারধরের শিকার যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তবে যাত্রী শামীম সিকদার জানান, তাকে কোনো ধরনের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়নি, শুধু শ্রমিকদের হামলায় তার ছিঁড়ে যাওয়া পোশাক কিনে দিয়ে মারধরের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন শ্রমিক নেতারা। তিনি কোনো বিচারই পাননি, পুলিশ এসেও কিছু করেনি।
রুপাতলী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, যতটুকু জেনেছি যাত্রীর সঙ্গে তর্কাতর্কি বাসস্ট্যান্ডে হয়েছে, তবে মারধরের ঘটনা স্ট্যান্ডের বাইরে সড়কে হয়েছে। আর যেহেতু বাসটি ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির তাই তাদের বিষয়টি জানিয়েছি, তারা ব্যবস্থা নেবেন।