হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার লজ্জার শঙ্কায় থাকা বাংলাদেশ দলকে সিরিজের শেষ ম্যাচে এসে ২৯৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছে লঙ্কানরা। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান তোলে লঙ্কানরা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও কুশল মেন্ডিসের অর্ধশতকে এবং কুশল পেরেরা ও ক্যাপ্টেন করুনারত্নের কার্যকরী চল্লিশোর্ধ দুটি ইনিংসের সুবাদে এই বিশাল সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ দল ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে সিরিজ খুঁইয়েছে। আজকের ম্যাচে নেমেছিলো হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার লজ্জা থেকে রেহাই পেতে। সেই লক্ষ্যে প্রথমেই টসে হেরে যায় টাইগার দলপতি তামিম ইকবাল। ইনিংসের শুরুর ওভারে কোনো রান না দিয়ে শুরু করা শফিউল আশা জাগিয়েছিলেন কিছু একটা ব্যতিক্রম হবে আজকে। কিন্তু সেই শুরু ধরে রাখতে পারেননি বাংলাদেশি বোলাররা।
দলীয় ১৩ রানে শফিউল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান আভিস্কা ফার্নান্দো (৬)। ৯৬ রানের মাথায় তাইজুল ইসলাম ফিরিয়ে দেন লঙ্কান দলপতি দিমুথ করুনারত্নেকে। ৬০ বলে ৬টি চারের সাহায্যে লঙ্কান দলপতি করেন ৪৬ রান। এরপর কুশল পেরেরাকে ফেরান রুবেল হোসেন। দলীয় ৯৮ রানের মাথায় পেরেরা সাজঘরে ফেরার আগে করেন ৫১ বলে ৫টি চারে ৪২ রান। এরপর ১০১ রানের জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস এবং অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ইনিংসের ৪২তম ওভারে সৌম্য সরকার ফিরিয়ে দেন কুশল মেন্ডিসকে। সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়ার আগে মেন্ডিস করেন ৫৪ রান। তার ৫৮ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর একটি ছক্কার মার।
এরপর ম্যাথুস খেলছিলেন দাশুন শানাকাকে নিয়ে। মারমুখি ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা দ্রুত ঘোরান সাবেক এই লঙ্কান অধিনায়ক। দাশুন শানাকা ১৪ বলে ৩০ রানের ছোট ক্যামিও দিয়ে ফিরে গেছেন শফিউলের বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ঠিক এর আগের ওভারেই সাব্বির শানাকার ক্যাচ মিস করেন। এরপর আসেন শিহান জয়সুরিয়া। তাকে নিয়ে আরো আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠেন ম্যাথুস। ইনিংসের ৪০ বল খেলে ৫০ স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাট করা ম্যাথুস রান আর বল সমান করে ফেলেন বোলারদের নির্দয় ভোবে পিটিয়ে।
শিহান ৬ বলে ১৩ রান করে অধিনায়ক তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে শফিউলের শিকার হয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকা ম্যাথুস ৮৭ রানে পার্ট টাইমার সৌম্যের বলে মুশফিকের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান। আকিলা ধনঞ্জয়কেও ফেরান সৌম্য। শেষ ওভারে ক্যাচ মিস করেন সাব্বির ও রান আউট মিস করেন সৌম্য। শেষ ১০ ওভারে ১০৬ রান দেন বাংলাদেশি বোলাররা। বাংলাদেশের হয়ে শফিউল ৩টি ও সৌম্য ৩টি উইকেট তুলে নেন। একটি করে উইকেট নেন রুবেল ও তাইজুল। বুধবার (৩১ জুলাই) সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি। গাজী টিভি ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সিরিজের সবক’টি ম্যাচ সরাসরি দেখা যাচ্ছে র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে।
সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জিতেছিল ৫ উইকেটে। গত ২৬ জুলাই সিরিজের প্রথম ম্যাচে লঙ্কানরা ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩১৪ রান। বাংলাদেশ ৪১.৪ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তোলে ২২৩ রান। ওয়ানডেতে তামিমের অভিষেক অধিনায়কত্বে সফরকারীরা ম্যাচ হারে ৯১ রানে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে গত ২৮ জুলাই মাঠে নেমেছিল দুই দল। বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩৮ রান। জবাবে, ৩২ বল হাতে রেখে ৩ উইকেট হারানো লঙ্কানরা ম্যাচ জেতে। বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারানোর পাশাপাশি স্বাগতিকরা নিজেদের মাটিতে প্রায় ৪৪ মাস পর ওয়ানডে কোনো সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ পায়।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।