রোবটের মতো চেষ্টা করলেন সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। খেললেন ঝলমলে দুটি ইনিংস। তবে তাদের আলোর পাশে অন্ধকারে ডুব দিলেন অন্যরা। ফলাফল যেমন ধারণা করা হয়েছিল তাই হলো। সৌম্য-মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পরও ৫২ রান ও ইনিংস ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। আগের দিনের ৪ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিন খেলতে নামে বাংলাদেশ। সৌম্য ৩৯ ও মাহমুদউল্লাহ ১৫ রান নিয়ে খেলা শুরু করেন। এদিন শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন তারা। বলের গুণাগুণ বজায় রেখে ব্যাট চালান দুজনে। বোঝাপড়া তৈরি হলে জমাট বাঁধে তাদের জুটি। গড়ে ওঠে অসাধারণ মেলবন্ধন। পথিমধ্যে ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। যেন পণ করেছিলেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন। দুর্দান্ত টাইমিং আর রিফ্লেক্সে খেলেন অনন্য সব ক্রিকেটীয় ও উদ্ভাবনী শট। এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। মাঝে চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ।
স্বভাবজাত খেলে ৯৪ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। এটি বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। অবশ্য যৌথভাবে। ২০১০ সালে লর্ডসে ৯৪ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ডটি এতদিন একার ছিল তামিম ইকবালের। তার পর সেঞ্চুরির পথে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। এতে নিউজিল্যান্ডকে সমুচিত জবাব দিতে থাকে টাইগাররা। তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করে লম্বা ইনিংসের পথে এগিয়ে যান সৌম্য। মনে হচ্ছিল, দেড়শ ছোঁয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে হঠাৎই খেই হারান তিনি। ট্রেন্ট বোল্টের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন সৌম্য। ফেরার আগে খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ১৪৯ রানের বীরোচিত ইনিংস। ২১ চার ও ৫ ছক্কায় এ ইনিংস সাজান বাঁহাতি টপঅর্ডার। এতে ভাঙে ২৩৫ রানের জুটি।
পরক্ষণেই টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। তবে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি লিটন দাস। বোল্টের বলে সোজা বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। এতে পথ হারায় বাংলাদেশ। এর জের না কাটতেই নিল ওয়েগনারের বলে জিত রাভালকে ক্যাচ তুলে দেন শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে মাহমুদউল্লাহকে সমর্থন জোগানোর চেষ্টা করেন আবু জায়েদ রাহী। তবে ব্যর্থ হন তিনি। বোল্টের বলে সোজা বোল্ড হয়ে ফেরেন এ লোয়ারঅর্ডার।
ফলে গুটিয়ে যাওয়াটা সময়ের ব্যাপার ছিল বাংলাদেশের। তবে লড়ে যান মাহমুদউল্লাহ। অবশেষে তার সংগ্রামও থামে। টিম সাউদির বলে বোল্টের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ২১ চার ও ৩ ছক্কায় ১৪৬ রানের অনিন্দ্যসুন্দর ইনিংস খেলেন অধিনায়ক। খানিক বাদেই গুঁড়িয়ে যায় টাইগাররা। শেষ পেরেকটি ঠুকেন সাউদি। এবাদত হোসেনকে কট বিহাইন্ড করে ফেরত পাঠান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪২৯ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। ফলে এক ইনিংস ও ৫২ রানের বড় জয়ের আনন্দে মাতেন কিউইরা। বাংলাদেশকে অলআউট করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন যথারীতি ওয়েগনার। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়ার পর এবার ৪ ব্যাটসম্যান শিকার বানিয়েছেন তিনি। ৪ উইকেট নিয়ে পার্শ্বচরিত্রে ভূমিকা পালন করেছেন সাউদি। তাদের যোগ্য সতীর্থের সমর্থন জুগিয়েছেন বোল্ট। তিনি ঝুলিতে ভরেন ৩ উইকেট।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।