ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিত !

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:২০ অপরাহ্ন
ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিত !

নানা নাটকীয়তার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর তার ঘোষিত ২৫ শতাংশ শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। মঙ্গলবার নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে, সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদক পাচার রোধে পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। সমঝোতা অনুযায়ী কানাডা একজন ‘ফেন্টানিল জার’ নিয়োগ দেবে এবং মেক্সিকো সীমান্তে দশ হাজার সৈন্য মোতায়েন করবে।  


ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কয়েক দফা ফোনালাপের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম এই সমঝোতায় সম্মত হন। কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। ট্রাম্প তার শুল্ক পরিকল্পনা চালু রাখলে উভয় দেশই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে আপাতত সেই উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে।  


চীনের ওপর দশ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আজ থেকেই কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে শিগগিরই কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিয়াভিট জানিয়েছেন, চীনা পণ্যের শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার জন্য দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগ হচ্ছে।  


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, কানাডার ওপর নতুন শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি আরও লেখেন, উত্তর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারে কানাডা একমত হয়েছে এবং এই প্রাথমিক অর্জনের পর আগামী ৩০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত থাকবে। ট্রাম্প আশা করছেন, এই সময়ের মধ্যে কানাডার সঙ্গে চূড়ান্ত বাণিজ্য চুক্তি করা সম্ভব হবে।  


কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, সীমান্ত পরিস্থিতির উন্নয়নে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার বিনিয়োগ করা হবে। নতুন পরিকল্পনায় হেলিকপ্টার, উন্নত প্রযুক্তি ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী যুক্ত করা হবে। পাশাপাশি ‘ফেন্টানিল জার’ নিয়োগ করে মাদক পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  


মেক্সিকোর পক্ষ থেকেও সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসন রোধে নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও সক্রিয় করা হবে। এর পাশাপাশি মাদক চক্রের বিরুদ্ধে নতুন অভিযান শুরু করবে দেশটি।  


বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ীরা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, এই ধরনের হঠাৎ পরিবর্তন ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বিশ্লেষকদের মতে, শুল্ক আরোপ বা প্রত্যাহারের এই আচরণ ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।  


ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক প্রতিষ্ঠান চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে মেক্সিকো ও ভারতে স্থানান্তর করেছে। কিন্তু ভবিষ্যতে কোন দেশ ট্রাম্পের পরবর্তী লক্ষ্য হবে, তা অনিশ্চিত। ব্যবসায়ীরা এখন অপেক্ষা করছেন পরবর্তী ঘোষণা এবং সম্ভাব্য চুক্তির জন্য।