ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে রোমাঞ্চ ছুয়ে গেল পুরো ইনিংসজুড়ে। রোহিত শর্মা যেমন করেছেন বিশ্বকাপজুড়ে, এদিনও করলেন তেমনই; থাকলো কেবল ইনিংস বড় না করার আফসোস। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের তোপ সামলে দারুণভাবেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল বিরাট কোহলি-লোকেশ রাহুল জুটি।
স্বাগতিকদের হতাশ করেন রাহুল, সূর্যকুমার যাদবরাও। পুরো বিশ্বকাপজুড়ে অপ্রতিরোধ্য ভারতের ব্যাটিং ফাইনালে এসে আড়াইশ রানও করতে পারেনি। রোববার নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে সব উইকেট হারিয়ে ২৪১ রানের লক্ষ্য দিয়েছেন রোহিত-কোহলিরা।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এসে প্রথম উইকেটটা পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। উইকেটে খুব একটা ক্যারি না থাকায় এর আগে অল্পের জন্য স্লিপে ক্যাচ হওয়া থেকে বাঁচেন শুভমন গিল। কিন্তু স্টার্কের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাটের ঠিক জায়গায় লাগাতে পারেননি। ৭ বলে ৪ রান করে মিড অনে দাঁড়ানো অ্যাডাম জ্যাম্পার ক্যাচ হয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
তার বিদায়ের পরও রোহিত শর্মা রানের গতি রেখেছিলেন ঠিকঠাক। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ভারত তোলে ৮০ রান। কিন্তু এর মধ্যে তাদের হারাতে হয় রোহিত শর্মার উইকেটও। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ বলে ৪৭ রান করে পার্ট-টাইম স্পিনার ম্যাক্সওয়েলের বল তুলে মারেন তিনি। বল উঠে যায় বেশি উপরে, কাভার থেকে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন ট্রাভিস হেড।
শ্রেয়াস আয়ারও দ্রুত ফিরলে বিপদেই পড়ে যায় ভারত। ৩ বলে ৪ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি, তার উইকেট নেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। শ্রেয়াসের বিদায়ের পর রাহুলকে নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে টেনে তোলেন বিরাট কোহলি। এর মধ্যে তিনি তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।
এই বিশ্বকাপে কোনো ব্যাটার ছয়শও রান করতে পারেনি, তিনি ছুটছিলেন আটশ রানের দিকে। কিন্তু এবারও অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা হন অধিনায়ক কামিন্স। আগের দিন তিনি বলেছিলেন, আহমেদাবাদের লাখের বেশি সমর্থককে চুপ করিয়ে দিতে চান। সেটি কোহলিকে ফিরিয়ে করে দেখান কামিন্স।
তার শর্ট বল কাট করতে গিয়ে কোহলির ব্যাটে লেগে স্টাম্পে যায়। অবিশ্বাসের চোখ নিয়ে ক্রিজে কিছুক্ষণ ঠাঁয় দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এই বিশ্বকাপের ১১ ম্যাচে ৯৫.৬২ গড় ও ৯০.৩১ স্ট্রাইক রেটে ৭৬৫ রান করেছেন। রোহিত শর্মা ৫৯৫ রান করে আছেন দুইয়ে।
কোহলির সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি ভাঙার পরও রাহুল ‘এংকরিংটা’ ঠিকঠাকই করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু স্টার্কের দুর্দান্ত এক বলে আর টিকতে পারেননি তিনি। ১০৭ বল খেলে স্রেফ একটি বাউন্ডারি হাঁকানো রাহুল করেন ৬৬ রান। তার বিদায়ের পর সব আশাই ছিল সূর্যকুমার যাদবকে ঘিরে।
কিন্তু তাকে স্লো বল করে বিপাকে ফেলে দেয় অস্ট্রেলিয়া। আলো না ছড়িয়েই সাজঘরে ফেরত যান সূর্য। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের শিকার হন তিনি। এরপর শেষ উইকেট জুটিতে যোগ হয় আরও ১৪ রান। ১৮ বলে ১০ রান করে ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন কুলদিপ যাদব। ৯ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সিরাজ।
বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ক ৩টি এবং হ্যাজেলউড ও কামিন্স ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। এছাড়া ম্যাক্সওয়েল ও জাম্পার ঝুলিতে গেছে ১টি করে উইকেট।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।