নারায়ণগঞ্জে প্রবীণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ৪ঠা এপ্রিল ২০২০ ০৯:৪০ অপরাহ্ন
নারায়ণগঞ্জে প্রবীণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত

নারায়ণগঞ্জে একজন প্রবীণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে আছেন। শনিবার (৪ এপ্রিল) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। তবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ওই চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থা এখন উন্নতির দিকে বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। বলা হচ্ছে, তিনি মোটামুটিভাবে ঝুঁকিমুক্ত।

এদিকে স্থানীয় একাধিক অনলাইন পোর্টালে আক্রান্ত চিকিৎসকের ব্যাপারে বলেছে সম্প্রতি বন্দরে করোনায় মারা যাওয়া নারীর চিকিৎসা করতে সংস্পর্শে গিয়ে তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন।

তবে বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, এই তথ্য সঠিক নয়। ওই নারীর সাথে এই চিকিৎসকের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি অন্য কোনভাবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কোথায় কার মাধ্যমে তার শরীরে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি বলেন, কোন চিকিৎসক সেটা আমার জানা নেই। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এতোতূকু আমি জানিম

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, আক্রান্ত চিকিৎসক শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে রোগী দেখতেন এবং সেখানে তার ব্যক্তিগিত চেম্বার রয়েছে। শহরের একটি বহুতল ভবনে একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে।

এদিকে তিনি যে ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতেন সেই প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গত ২৩ মার্চ ওই চিকিৎসকের শরীরে জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি কাশিসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকার একটি অভিজাত হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে তাকে ভর্থি রাখা হয়। সেখানে পরীক্ষা নীরিক্ষার পর প্রাপ্ত রিপোর্টে সন্দেহ হলে আইইডিসিআরের সাথে যোগাযোগ করা হয়। পরে আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ২৬ মার্চ সেখানকার রিপোর্টে করোনা ভাইরাস নিশ্চিত হয়।

এর আগে ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় যার মধ্যে দুইজনই ছিলেন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। তারা ইতালী ফেরত স্বামী স্ত্রী ছিলেন। এরপর আরও একজনের করোনা ভাইরাস পযেটিভ আসে। তিনি আক্রান্তদের সংস্পর্শে ছিলেন।

এদিকে জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন দুপুরে তার কার্য্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনা বিষয়ক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলার করোনা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, জেলা প্রশাসক জানান, বন্দর উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া নারীর পরিবারের সদস্যরাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কোয়ারেন্টাইনের আওতায় রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জেলায় এ পর্যন্ত ৫১৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪১৪ জনের শরীরে করোনা উপসর্গ না থাকায় মেয়াদ শেষে তারা ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১০০জন। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব