
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় সারাদেশের সাথে চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ দুর্ঘটনার পর কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পড়েছে জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন। কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সফিকুর রহমান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন দুইটি উদ্ধার করতে কুমিল্লার লাকসাম ও আখাউড়ার রেলওয়ে জংশন থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে এসেছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। দুর্ঘটনার খবর জানতে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনেও উৎসুক জনতা ভিড় করেছে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার শফিক তুহিন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন দুইটি উদ্ধার করতে কুমিল্লার লাকসাম ও আখাউড়ার রেলওয়ে জংশন থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে এসেছে। সেখানে উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট ও রেলওয়ে থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রেলওয়ে সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল করিম, জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। পরিদর্শন শেষে রেলওয়ে সচিব বলেন, রেলওয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা। দুটি আন্তঃনগর ট্রেনের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। ৯ জনের লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যায়।
আহত এ পর্যন্ত ৮৬ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হওয়ায় তাদের অবস্থার অবনতি ঘটছে। তাদের সঠিক চিকিৎসার জন্য অনেক রক্তের প্রয়োজন। যাদের রক্তের গ্রুপ জানা আছে দয়া করে কসবা সদর এবং কুমিল্লার হাসপাতালগুলোতে রক্ত দানে এগিয়ে আসার আহব্বান জানানো যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) মন্দবাগ রেলস্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, আউটার ও হোম সিগন্যালে লাল বাতি (সর্তক সংকেত) দেওয়া ছিল। কিন্তু তুর্ণার নিশীতার চালক সিগন্যাল অমান্য করে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ-দৌলা খানও এ কথা জানিয়েছেন। ট্রেনের ভেতরে থাকা তুর্ণা নিশীতার যাত্রী কাজি ফজলে রাব্বি বলেন, উদয়ন এক্সপেস অন্য লাইনে ঢোকার আগেই বিপরীত দিক থেকে এসে তুর্ণা নিশীথা ধাক্কা দেয়। এতে তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ সময় আমরা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। তাড়াতাড়ি করে ট্রেন থেকে নেমে পড়ি। উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ট্রেনটি লাইন ক্রস করছিল।

ওই সময় দ্রুত গতিতে এসে তুর্ণা নিশীথা ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়। আমি সামনের বগিতে থাকায় হতাহত হয়নি। পেছনে ঝ, ঞ, বগিসহ আরেকটি বগির যাত্রীরা বেশি আহত হয়। আমরা সবাই ট্রেন থেকে নেমে আহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করি।
ইনিউজ ৭১/এম.আর