পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে সালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন বাজারে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ফলে উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন। স্থানীয় বিএনপির কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বসতঘর ভাঙচুরের শিকার হয়।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে মাঝেরচর এলাকায় একটি জেলে ট্রলারের শ্রমিকদের বেতন নিয়ে সালিশ বৈঠক বসানো হয়। সেখানে ট্রলার মালিক পক্ষ এবং তিন শ্রমিকের বিরোধ মীমাংসা করতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সদস্যরা আলাদাভাবে উপস্থিত হয়। এই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষের জেরে ছাত্রলীগের সদস্যরা সন্ধ্যায় বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং বাজারে ভাঙচুর শুরু করে। খবর পেয়ে বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এর ফলে চরবেষ্টিন ও পাশের গ্রাম চররুস্তুমের মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে ইটপাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে উভয় পক্ষ আলাদা অবস্থানে দাঁড়িয়ে ছিল। রাত ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও নৌবাহিনীর যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য গলাচিপা ও পটুয়াখালী জেলা শহরে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার ফজলুর রহমান জানান, “আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি, কিন্তু লোকজন বৃষ্টি মতো ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে।”
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এখন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। স্থানীয় এলাকায় এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।