বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেছেন, গত ১৬ বছর ধরে ভারত ছাড়া শেখ হাসিনাকে বিশ্বের আর কোনো দেশ সমর্থন করেনি। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রিজভী।
এ সময় তিনি ভারত সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, "ভারত মনে করে আমরা চিরকাল তাদের গোলাম হয়ে থাকব, অনুগত হয়ে থাকব।" তিনি ভারতের নীতি নির্ধারকদের উদ্দেশে বলেন, "আপনারা যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করেন, তবে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার কেন?" তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া বাংলাদেশে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার প্রতিবাদ করে না।"
ভারতের প্রতি রিজভীর অভিযোগ ছিল যে, তারা বিভিন্ন মিডিয়ায় বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য প্রদান করে। "আপনারা যা বলছেন, তা মিথ্যা ও অপপ্রচার। পৃথিবী জানে বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। যারা আমাদের ঘৃণা করে, তারা যতই অপবাদ দিক, আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব," বলেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সমালোচনা করে রিজভী বলেন, "মোদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করেছেন। ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষিত হলেও তা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাচ্ছিল্য।" তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আমাদের দামাল ছেলেরা যুদ্ধ করেছে। ভারত বন্ধুর ভূমিকা পালন করেছে, কিন্তু এই বিজয় দিবস শুধুমাত্র ভারতের নয়, এটি বাংলাদেশেরও।"
রিজভী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে বলেন, "আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের জীবনের কোনো মূল্য নেই?" তিনি বলেন, "ভারতের বিজয় দিবসের বদলে আমাদের ১৬ ডিসেম্বর দিনটি বাংলাদেশের বিজয় দিবস হওয়া উচিত।"
এছাড়া তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে কর্নেল এম এ জি ওসমানীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, "যদি ভারত আমাদের সাহায্য না-ও করতো, তবুও বাংলাদেশ স্বাধীন হতো।" তিনি উদাহরণ হিসেবে বীরশ্রেষ্ঠদের নাম উল্লেখ করেন এবং বলেন, "এই বীরেরা ভারতের বিজয়ের জন্য নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন।"
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম এবং ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আওয়াল প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।