প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৫
ময়মনসিংহে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও পরিবহন শ্রমিক পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে আজও বন্ধ রয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের বাস চলাচল। রোববার (১২ অক্টোবর) ভোর থেকেই রাজধানীমুখী এবং ময়মনসিংহগামী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
জেলা মোটরযান মালিক সমিতি ও জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন জানিয়েছে, ঢাকায় পরিবহন মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে এই রুটে সব বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে শুধু ময়মনসিংহ নয়, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জসহ পাঁচ জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে হঠাৎ এই ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা। অনেকে বিকল্প যানবাহন বা প্রাইভেটকারে ঢাকায় ফেরার চেষ্টা করলেও গন্তব্যে পৌঁছাতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। অনেক যাত্রীকে টার্মিনালে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
গত শুক্রবার রাতে এনসিপি নেতাকর্মী ও জুলাইযোদ্ধাদের মধ্যে বিরোধ থেকে এই অচলাবস্থার সূচনা হয়। জেলার ইউনাইটেড বাস কাউন্টারে জুলাইযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৮টার দিকে এনসিপির নেতাকর্মীরা কাউন্টারে তালা দিয়ে অবস্থান নেন। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
ওই সময়ে অভিযুক্ত এক শ্রমিককে আটক করা হলেও এনসিপির নেতাকর্মীরা চার দফা দাবিতে তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল জুলাইযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার দায়ীদের শাস্তি ও বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
শনিবার সকালে মাসকান্দা বাস টার্মিনালের সামনে এনসিপির নেতাকর্মী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতারা ছাদর পেতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তাদের ব্যানারে শহিদ রিদোয়ান হোসেন সাগর ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হকের ছবি ব্যবহার করা হয়। ব্যানারে লেখা ছিল, শহিদ সাগর হত্যা মামলার আসামি ও ময়মনসিংহের আত্মস্বীকৃত গডফাদার আমিনুল হক (শামীম)-এর মালিকানাধীন পরিবহন বন্ধ ও তার গ্রেপ্তারের দাবি।
অবস্থানের মুখে পরিবহন শ্রমিক পক্ষও পাল্টা ঘোষণা দেয় যে, এনসিপি পক্ষ আন্দোলন না থামালে তারা বাস চলাচল শুরু করবে না। এ অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া সংকট নিরসনের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এদিকে জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তবে এখনই বাস চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।