প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৮
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা মডেল ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো একটি জরাজীর্ণ কাঠের সাঁকো। দীর্ঘদিন ধরে এ সাঁকো দিয়েই প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন শত শত মানুষ। স্থানীয়রা বহুবার একটি স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে জানা গেছে, গৈলা ইউনিয়নের রাহুতপাড়া ও কাঠিরা গ্রামের মাঝখানে একটি খালের ওপর স্থানীয়দের উদ্যোগে কাঠের সাঁকোটি নির্মিত হয়েছিল বহু বছর আগে। বর্তমানে সেটিই ১০ গ্রামের মানুষের একমাত্র যাতায়াতের পথ। সকালে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক, এমনকি মন্দিরগামী ভক্তরাও প্রতিদিন এই সাঁকো পার হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাঁকোর আশেপাশের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোন স্থায়ী সেতু নেই। ফলে প্রতিদিনই মানুষকে কাঁপতে থাকা কাঠের তক্তার ওপর দিয়ে পার হতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই খালে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।
গ্রামের যুব সমাজের উদ্যোগে প্রতিবছর নিজস্ব অর্থায়নে সাঁকোটি মেরামত করা হয়। তবে সেটি টেকসই নয়। জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে সরকারিভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি বহুবার তুললেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তা এখনো বাস্তবায়ন করেননি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
কাঠিরা গ্রামের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. প্রশান্ত রায় বলেন, এই সাঁকোটি প্রথম নির্মাণ করা হয় ২০০২ সালে। সেই থেকে বারবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। তিনি বলেন, আমাদের এলাকা বহু বছর ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত। একটা ব্রিজ হলে পুরো অঞ্চলের চিত্রই বদলে যেত।
একই গ্রামের লিমন সরদার জানান, একটি ব্রিজের অভাবে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি গ্রামের ভেতর গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় সামাজিক জীবনে নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে। তিনি বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে এলাকার উন্নয়ন চিরদিন পিছিয়ে থাকবে।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দ্রুত একটি স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নিক। এতে শুধু ১০ গ্রামের নয়, আশপাশের বহু মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে এবং উন্নয়নের নতুন দুয়ার খুলবে।
অবশেষে, ভুক্তভোগী এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই স্থানে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মিত হয় এবং তাদের বহু বছরের দুর্ভোগের অবসান ঘটে।