প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে, রাতে সেখানে গোলাগুলি চলছে। ভিডিওটি বিশেষ করে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট কিছু ফেসবুক পেইজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়েছে। তবে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, ভিডিওটি খাগড়াছড়ির নয়, বরং ইন্দোনেশিয়ার পুরোনো এক বিক্ষোভের দৃশ্য।
বাংলাফ্যাক্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে কেন্দ্র করে ইন্দোনেশিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় এই ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে তা বিভ্রান্তিকরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। ফলে দেখা যায়, ‘অং জোউ মাইন্ত’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ৩১ আগস্ট ভিডিওটি প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে ঘটনাটি স্পষ্টভাবে ইন্দোনেশিয়ার হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, ‘এরিক সুয়া’ নামের আরেকটি অ্যাকাউন্ট থেকেও ভিডিওটি ইন্দোনেশিয়ার বিক্ষোভ হিসেবে নিশ্চিত হয়েছে। ভিডিওতে থাকা একাধিক ফ্রেমের মিলের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া গেছে, দৃশ্যগুলো খাগড়াছড়ির নয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভিডিওতে একটি গাড়ির গায়ে লেখা রয়েছে ‘BRIMB’। অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে, এটি ইন্দোনেশিয়ার পুলিশের অধীন একটি আধাসামরিক বিশেষায়িত ইউনিট ‘মোবাইল ব্রিগেড কর্পস’ (Brimob)-এর। এই তথ্য ভিডিওটির আসল উৎস সনাক্ত করতে সাহায্য করেছে।
ফলে স্পষ্ট, ভিডিওটিকে ‘খাগড়াছড়ির গোলাগুলি’ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ভিডিও ছড়ানো মানে সাধারণ জনগণের মধ্যে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করা।
বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করার ক্ষেত্রে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ ধরনের তথ্য যাচাই ছাড়া ছড়িয়ে পড়লে সমাজে অসামাজিক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাফ্যাক্টের এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া প্রতিটি ভিডিও বা তথ্যের সত্যতা যাচাই করা অপরিহার্য।
এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ রোধে নাগরিকদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় দায়িত্বশীল ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তথ্য যাচাই ছাড়া কোনো সংবাদ শেয়ার করা উভয় দিকেই ক্ষতিকর।