প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনে আরও ৯১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৮ জন গাজা সিটির বাসিন্দা এবং তাদের মধ্যে অন্তত ছয়জন ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারান। প্রতিদিনের মতোই এ হামলা স্থানীয় মানুষের মধ্যে নতুন আতঙ্ক তৈরি করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, দখলদার ইসরাইল মধ্য গাজার সারায়া এলাকায় বেসামরিক মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। হামলার তীব্রতায় বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আহত হয়েছে আরও অনেকে। প্রায় প্রতিদিনই ১০০ মানুষ নিহত হলেও ইসরাইলি আগ্রাসন থামছে না।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ হুমকি দিয়ে বলেছেন, সব লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তারা গাজায় অভিযান চালিয়ে যাবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, গাজায় বর্বরতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এদিকে গাজা শহর থেকে ইতিমধ্যে ৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন। মানবিক সংকট গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে সংস্থাগুলো।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন আটটি মুসলিম দেশের নেতারা। বৈঠকে ট্রাম্প ২১ দফা প্রস্তাব দেন, যা গাজা উপত্যকার চলমান যুদ্ধ বন্ধে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে বলে নেতারা জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে তারা বলেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে।
আগামী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক হবে। এ বৈঠকে গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। চুক্তিটি ইসরাইল মানবে কি না, তা এ বৈঠকের পরই জানা যাবে।
জাতিসংঘে দেওয়া বক্তব্যে নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেছেন, গাজায় হামলা অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা হয়তো যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। এই দুই নেতার বক্তব্যের মধ্যে তফাৎ আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
গাজার এই সংকট নিরসনে বিশ্ব নেতাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা না গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।