প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৮
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুলিশ আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে পৃথক স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। এ নিয়ে মামলায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়ার শান্ত কাজী (১৯) ও ফরিদপুরের সালথা থানার ঘটরকান্দা গ্রামের মোহাম্মদ আনিছুর রহমান (৩০)। শান্ত কাজীকে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে নিজ এলাকা থেকে এবং আনিছুর রহমানকে রাত সোয়া ১১টার দিকে উজানচর ইউনিয়নের জামতলাহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে সোমবার রাতে নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার অজ্ঞাত আসামির নামে মামলা দায়ের করেন। মামলায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার রাতে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে দুটি মামলায় মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে ধাপে ধাপে আসামিদের শনাক্ত করে আটক করা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার রাতে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড় ঠাকুরকান্দি গ্রামের মুফতি আবদুল লতিফ (৩৫) ও গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অভি মণ্ডল ওরফে রঞ্জু (২৯) কে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে তোলার পর আবদুল লতিফ হামলায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে গোয়ালন্দ বাজার আনসার ক্লাবের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়। এতে রাসেল মোল্লাসহ দরবারে থাকা ভক্তরা আক্রান্ত হন।
আজাদ মোল্লা জানান, হামলাকারীরা দেয়াল টপকে দরবারে ঢুকে তার ছেলে রাসেল মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় প্রায় ৫০ জন ভক্ত ও মুরিদানকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেও রাসেলকে দ্বিতীয় দফায় মারধর করা হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আজাদ মোল্লা দাবি করেন, হামলাকারীরা দরবারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। দরবারের ভক্তদের জমাকৃত অর্থ এবং অন্যান্য জিনিসপত্রও লুটে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।