প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন এক নবদম্পতি। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই স্ত্রী শ্রাবণী ভাদুরী মারা যান এবং গুরুতর আহত স্বামী সঞ্জয় মণ্ডলকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনিও মৃত্যুবরণ করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার জান নগর গ্রামের সঞ্জয় মণ্ডল স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে মধুখালি যাওয়ার পথে টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে পৌঁছালে ছোট ছোট স্পিডব্রেকারের কারণে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে ছিটকে পড়েন তারা।
এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অজ্ঞাত যানবাহন তাদের উপর দিয়ে চলে যায় এবং অন্তত ২০ ফুট টেনে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই শ্রাবণী ভাদুরীর মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা চিৎকার শুনে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আহত সঞ্জয় মণ্ডলকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার গুরুতর অবস্থার কথা জানিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বজন অপূর্ব ভাদুরী জানান, বোন শ্রাবণী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর ভগ্নিপতি সঞ্জয়কে বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয়েছে। পরিবারের হঠাৎ এই দুটি মৃত্যুতে নেমে এসেছে গভীর শোক।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কৌশিক কুমার দাস বলেন, সঞ্জয়ের মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এবং তার অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। তাই দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুরে পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার ওসি মো. শামীম শেখ জানান, আহত সঞ্জয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। নিহত শ্রাবণীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, মহাসড়কে যথাযথ সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর প্রাণহানি গোটা এলাকায় শোকের আবহ তৈরি করেছে। এই দুর্ঘটনা সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্নকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।