প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ২০:৭
দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ নতুন এক ভয়াবহ রেকর্ড গড়েছে। ব্যাংকিং খাতের ইতিহাসে এই প্রথম খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। যা দেশের ব্যাংকিং খাতে বিতরণকৃত মোট ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশেরও বেশি।
গত মার্চ মাসে এই খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। এমনকি এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে তিন লাখ ১৯ হাজার ৩৬ কোটি টাকা, যা ১৫০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।
২০২৪ সালের জুনে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। এই হিসাব থেকে বোঝা যায়, দেশের ব্যাংক খাতে ঋণ আদায় ও ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির প্রভাব কতটা মারাত্মক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, অতীতে অনেক বড় ঋণগ্রহীতা নানা নীতিগত ছাড়ের সুযোগ নিয়ে পুরোনো ঋণকে ‘নিয়মিত’ দেখিয়ে আবার নতুন নামে ঋণ গ্রহণ করতেন। এতে প্রকৃত খেলাপির পরিমাণ গোপন থাকত।
তবে সরকার পরিবর্তনের পর মার্চ মাস থেকে নতুনভাবে নির্ধারিত সময় পার হলেই ঋণকে মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। এতে খেলাপি চিত্র বাস্তবভাবে উঠে আসছে, যা আগে কখনও প্রকাশ পায়নি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতা, শিল্প খাতের দুরবস্থা, উদ্যোক্তাদের দেশত্যাগ বা কারাবরণ এবং ব্যাংক ব্যবস্থার দুর্বলতা ঋণ আদায়কে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে ঋণের বিপরীতে প্রত্যাশিত অর্থ ফেরত আসছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এখনো অফিসিয়াল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। কাজ চলছে এবং সম্পন্ন হলে তা প্রকাশ করা হবে। তবে প্রাথমিক তথ্য বলছে, এই ঋণের পরিমাণ অভাবনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।