প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৬
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশুটির নাম জারিফ, বয়স ১৪ বছর। শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই দুর্ঘটনার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে। দগ্ধ ও আহতদের বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর, যারা দুর্ঘটনার সময় ক্লাসে বা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিল। নিহতদের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে, যা এই দুর্ঘটনাকে দেশের ইতিহাসে অন্যতম হৃদয়বিদারক সামরিক ট্রাজেডিতে পরিণত করেছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বর্তমানে আরও ৪০ জন দগ্ধ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, এই পাঁচজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আশঙ্কাজনকদের পাশাপাশি ১০ জন সিপিআর ক্যাটাগরিতে আছেন, যাদেরও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া পোস্ট অপারেটিভ ইন্টারমিডিয়েট কেয়ার ইউনিটে রয়েছেন আরও ১০ জন এবং ক্যাবিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৫ জন।
গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে সংঘটিত এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল যখন একটি সামরিক যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ও আগুনে স্কুল ক্যাম্পাস মুহূর্তেই আতঙ্কে ছেয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দগ্ধ অবস্থায় চিৎকার করে বেরিয়ে আসে এবং চারপাশে ধোঁয়া ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
সরকারি পর্যায়ে তদন্ত চলছে এবং দগ্ধদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে জাতীয় বার্ন ইউনিটে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দেশব্যাপী এই দুর্ঘটনা নিয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নিহতদের স্মরণে শোক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।