প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১৬:৫৩
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী দেবীদ্বারের মাহতাব দীর্ঘ লড়াইয়ের পর জীবন হারিয়েছেন। ২৪ জুলাই দুপুর পৌনে ২টায় রাজধানীর জাতীয় বার্ণ ইউনিটের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়েছে। মাহতাবের বাবা মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া এই মর্মান্তিক ঘটনাটি নিশ্চিত করেন। মারাত্মক আগুনে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিলো।
মাহতাব মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। সে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ ভুঁইয়া বাড়ির সন্তান। এক ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয় সন্তান। বাবার ব্যবসার কারণে সে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের একটি বাসায় বসবাস করতো।
ঘটনার দিন, ২১ জুলাই সকালে মাহতাবের মা লিপি বেগম তাকে স্কুলে পাঠান। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের সবাই তৎপর হন এবং বার্ণ ইনস্টিটিউটে তাকে খুঁজে পান দগ্ধ অবস্থায়। এরপর থেকে তারা তার সুস্থতার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু আজ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল; মাহতাব আর বাঁচলেন না। এই মৃত্যুতে পরিবারের সবাই ভারাক্রান্ত। মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, বাবা কপালে চাপড়াচ্ছেন, ভাই আর বোনের কান্না থামছে না।
মাহতাবের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেবীদ্বারের চুলাশ গ্রামে আনা হবে এবং সেখানে দাফন সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, ২১ জুলাই দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৩ জন নিহত এবং অনেক আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মাহতাবের মর্মান্তিক মৃত্যু জাতীয় এক শোকের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার পরিবার ও স্কুলের সবাই এই অকস্মাৎ দুর্ঘটনার জন্য শোকাহত। এই দুর্ঘটনা দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে গভীর দুঃখের ছাপ ফেলেছে।
অসংখ্য ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকগণ এই দুর্ঘটনার শোককে নিজের মর্মে ধারণ করেছেন। আহত শিক্ষার্থীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে সবাই একযোগে প্রার্থনা করছে।
এ ঘটনাটি দেশের সশস্ত্র বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা না ঘটে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে।
মাহতাবের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে গোটা দেবীদ্বার এলাকা শোকস্তব্ধ। দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা তার জন্য দোয়া করছে এবং পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।