প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫১
নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড়ে সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বর্ণাঢ্য পথসভা ও পদযাত্রা, যেখানে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নতুন বাংলাদেশের জন্য মৌলিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটেছে, তবে কেবল এতে থেমে থাকলে চলবে না, বরং একটি মৌলিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে দেশের কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে। নাহিদ ইসলাম জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে গণঅভ্যুত্থানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, যারা এই আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সেই স্বীকৃতি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি দৃপ্ত কণ্ঠে জানান, এই দাবির বিপরীতে কোনো ষড়যন্ত্র বা টালবাহানা সহ্য করা হবে না এবং কোনো বিকল্প চিন্তাও গ্রহণযোগ্য নয়। বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম নতুন প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা হিসেবে তুলে ধরেন একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যকে।
নাহিদ অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্টের বিজয়ের পর নানা পক্ষ সেই লক্ষ্য থেকে সরে গেছে এবং নাটোরের কর্মসূচিতে ন্যক্কারজনকভাবে ব্যানার ছিঁড়ে দিয়ে বাধা দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ঠিক এক বছর আগে যারা আন্দোলনে বাধা দিয়েছিল তারা আজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এবারও যারা শিক্ষা নেবে না, তাদের পরিণতি হবে একইরকম।
সভায় তিনি নাটোরের আট শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন, যাঁরা গণঅভ্যুত্থানে নিজেদের জীবন দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, শহীদদের রক্ত শুধু একটি সরকারের পতনের জন্য ছিল না, বরং তা ছিল একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
দুপুর ১টার দিকে রাজশাহী থেকে সড়কপথে নাটোরে এসে পৌঁছান এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এই দলে ছিলেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সভায় দলীয় নেতারা দাবি করেন, বাংলাদেশের মৌলিক কাঠামোতে হস্তক্ষেপ করা হলে এবং সংস্কারে বাধা দেওয়া হলে জনতার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তারা স্পষ্ট করে দেন, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র ছাড়া কোনো ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়।
এনসিপির এই পদযাত্রা ও সভায় নাটোরবাসীর উপস্থিতি ও সমর্থন ছিল উল্লেখযোগ্য, যা দলটির প্রতি জনমানুষের আস্থার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। এনসিপি জানিয়ে দিয়েছে, তারা শুধুমাত্র শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন নয়, দেশের গোড়ার সংস্কারেই বিশ্বাসী।