প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১৬:৩৮
যমুনা সেতুর ওপর দীর্ঘ যানজট নিরসনে সেতুর পরিত্যক্ত রেলপথ অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে, যা সেতুর প্রস্থ বাড়াতে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল অংশ থেকে নাট-বল্টু খুলে ফেলার মাধ্যমে শুরু হয় এ কাজ। পরিত্যক্ত রেললাইন অপসারণের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সেতু বিভাগ পৃথকভাবে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলে রেলপথ সরানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে সেতু বিভাগ।
সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, রেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় সেতুর রেললাইন এখন কার্যত অপ্রয়োজনীয়। তাই সড়কপথকে অধিক কার্যকর ও যানজটমুক্ত করার স্বার্থেই রেলপথ অপসারণ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সেতুর এক লেনের প্রস্থ ৬ দশমিক ৩ মিটার, যেখানে আদর্শ মাপ হওয়া উচিত ৭ দশমিক ৩ মিটার। পরিত্যক্ত রেলপথ সরিয়ে ফেললে সেতুর প্রস্থ আরও সাড়ে ৩ মিটার পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে, যা যানজট কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
১৯৯৮ সালে যমুনা সেতু চালু হলে একইসাথে সড়ক ও রেলপথ যুক্ত হয় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগে। তবে ২০০৮ সালে সেতুর গায়ে ফাটল দেখা দিলে রেলের গতিসীমা কমিয়ে দেয়া হয়, ফলে যাত্রী দুর্ভোগ বাড়তে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে নির্মাণ করা হয় যমুনার ৩০০ মিটার পাশে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু, যেটি ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করে।
নতুন রেলসেতু চালু হওয়ার পর যমুনা মূল সেতুতে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরনো রেললাইনটি একপ্রকার অবহেলিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এই অবস্থায় তা সরিয়ে ফেললে শুধুমাত্র যানবাহনের জন্য সেতুটি আরও উপযোগী হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলপথ অপসারণের কাজ শেষ হলে যাবতীয় মালামাল রেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নতুন পরিকল্পনার আওতায় সেতুটি আগের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর ও যানজটমুক্ত একটি আধুনিক সড়কপথে রূপ নেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।