নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন সাবেক শিক্ষক মিজানুর রহমান (উপাধি মিজান) নবম ও দশম শ্রেণির চার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তিন ভুক্তভোগী ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মৃত আবু তালেব শিকদারের ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৬, ১১ ও ২৩ জুন তিনি স্কুলের চার ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে যান। একটি ভাড়া বাসায় আটকে রেখে তাদের একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
ঘটনার বিস্তারিত জানা গেছে, সর্বশেষ ২৩ জুন আরেক ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়ার পর সে পালিয়ে যায় এবং ২৪ জুন পরিবারকে জানায়। তার তথ্য অনুযায়ী পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাকি তিন ছাত্রীকে উদ্ধার করে। মিজানুর রহমান প্রতি শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক অসচ্ছল পরিবারের মেয়েদের টার্গেট করতেন। ভুক্তভোগী চার শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন নবম ও দুজন দশম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের মধ্যে একজনের বাবা ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ জানায়, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চাইলে তিন দিন মঞ্জুর করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার গভীরতা অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, মিজানুর রহমান স্কুলে আর্ট ও কম্পিউটার ক্লাস নিতেন। তার এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে বলে তারা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছে। তারা চান, দোষী ব্যক্তিকে দ্রুত শাস্তি দেওয়া হোক এবং এমন ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য কঠোর নজরদারি চালানো হোক।