প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১৯:৫২
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
হবিগঞ্জ জেলার ব্যস্ততম সড়ক কামরাপুর ব্রিজ এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে কাগজপত্র দেখার নামে গোপনে অর্থ আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়ে শত শত মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, ট্রাফিক সদস্যরা কিছু গাড়িচালকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকারও বেশি ঘুষ আদায় করছেন।
গতকাল দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে এক প্রতিবেদক সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে এমন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হন। কামরাপুর ব্রিজের ট্রাফিক সিগন্যালে কর্তব্যরত সার্জেন্ট তাঁকে থামিয়ে বাইক পার্ক করতে বলেন। পরে বাইকের কাগজপত্র পরীক্ষা করে জানান যে, তাঁর গাড়ির বিরুদ্ধে ৮ হাজার টাকার মামলা হবে এবং থানায় গিয়ে জরিমানা দিয়ে বাইক ছাড়িয়ে আনতে হবে।
প্রতিবেদক জরুরি কাজে আসার কথা জানালে সার্জেন্ট স্বপন জানান, চাইলে ৫ হাজার টাকা দিলে মামলা না দিয়ে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তখন আরও এক সদস্য, মিজানুর নামে এক ট্রাফিক পুলিশ এগিয়ে এসে বলেন, কত টাকা দেওয়া সম্ভব সেটা জানালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধান করে দেবেন।
ঘটনার একপর্যায়ে আলোচনা ৫০০ টাকার বিনিময়ে মীমাংসায় গিয়ে পৌঁছায়। তবে ট্রাফিক সদস্য নিজের হাতে টাকা না নিয়ে প্রতিবেদককে কাছেই থাকা সামিয়া ব্যাটারি হাউজ নামের একটি দোকানে নিয়ে যান। সেখানে দোকানদারকে টাকা দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। দোকানদার প্রতিবেদকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে সরাসরি পুলিশের হাতে দিয়ে দেন।
এই ঘটনা এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, নিয়মিত এমনভাবে অর্থ আদায় করা হচ্ছে এবং দোকানগুলোকেও এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে যেন ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ না থাকে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, এমন অপেশাদার আচরণ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ভুক্তভোগীরা আশা করছেন, গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হবে এবং এমন বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।